Brahmanbaria ০৬:৩৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Last News :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রায় ১২ হাজার ভারতীয় ইয়াবাসহ ২ মাদক ব্যবসায়িক আটক নাসিরনগর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক লতিফ আটক বিজয়নগরে দু’দল গ্রামবাসীর সংঘর্ষে আহত ৩০ বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের হেনস্থা বন্ধসহ শ্রেণীকক্ষের শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করা দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মানববন্ধন  ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিপুল পরিমাণ ফেনসিডিলসহ ৩ জন মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার সরকারি চাকরি দেওয়ার নামে অভিনব পন্থায় কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ট্রেনের ধাক্কায় ছাত্রদল নেতা নিহত ব্রাহ্মণবাড়িয়া ব্র্যাক এরিয়া সেলস্ সেন্টারের কৃত্রিম প্রজনন সেবাকর্মীর মৃত্যুর চেক প্রধান বিদ্যালয়ে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশের দাবীতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ও মানববন্ধন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আওয়ামীলীগ নেতাকে গ্রেপ্তারের দাবিতে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি

সাহিত্য একাডেমির আয়োজনে ৭ দিনব্যাপী বৈশাখী উৎসব উদ্বোধন করেন: গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী 

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৭:১০:৪৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৪
  • ২৯৯ Time View

গ্রাম বাংলার লোকজ-ঐতিহ্য বা বিভিন্ন ধরনের লোকগান কিংবা লোকজ সংস্কৃতি প্রচার ও প্রদর্শনীর মাধ্যমে বৈশাখী উৎসবের আন্তরিক প্রয়াসের পরিচয় মেলে। শিশুদের জন্য মাটির পুতুল, ঠুলি, চুলা, ডুগডুগিসহ নানা বাহারের জিনিসপত্রের এক সমাহারে পরিণত হয়েছে এই উৎসব। সাহিত্য একাডেমি ১৩৯০ বাং (১৯৮৩ খ্র.) প্রতিষ্ঠার ৪ বছর পর ১৩৯৪ বাং (১৯৮৭ খ্র.) থেকে স্থানীয় শহিদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ভাষা চত্বর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া ইন্ডাস্ট্রিয়েল স্কুল) মাঠে ৭ দিনব্যাপী বৈশাখী উৎসব করে আসছে যা পর্যায়ক্রমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মানুষের প্রাণের উৎসবে পরিণত হয়েছে। প্রতিবছরের মত এবারও উৎসবে প্রায় ২০টি নানান ধরনের লোকজ স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

উৎসবের সূচনাপর্বে সাহিত্য একাডেমির প্রশিক্ষণ বিভাগের শিক্ষার্থীদের নববর্ষের গান ও নৃত্য এবং ভাষা ও সাহিত্য অনুশীলন কেন্দ্রের দলীয় আবৃত্তি ও নৃত্য পরিবেশনায় উৎসবটি শুরু হয়। রবিবার সন্ধ্যায় সাড়ে ছয়টায় বৈশাখী উৎসবের উদ্বোধনী দিনে হাজার দর্শকের উপস্থিতিতে সাহিত্য একাডেমির সভাপতি কবি জয়দুল হোসেনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজান্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী।

প্রধান অতিথি প্রদীপ প্রজ্জ্বালনের মাধ্যমে তাঁর বক্তব্যে বলেন, ধর্ম, বর্ণ, গাত্র ও বংশ পরিচয় যাই হোক না কেন সকলে মিলে পালন করার যে দিবসটি পালন করা হয় সেটি হল বাংলা নববর্ষ ও শহিদ দিবস। সার্বজনীনতা সত্বেও আমাদের মধ্যে কিছু লোক আছে এরা এক ধরনের মানুষ, যাদেরকে মানুষ বলাও শোভা পায় না। এদেরকে এখনো পাকিস্তানের মুণ্ড ঘাড়ে চেপে আছে। এরা মানুষেয় মাঝে ধর্মান্ধতা ছড়িয়ে মানুষের মাঝে বিভেদ সৃষ্টি করতে চায়। কতভাবে যে আপনাকে বিভ্রান্তের চেষ্টা করবে। অথচ দেখেন আজকে এই আনন্দ উৎসব পালন করার জন্য এত মানুষ ঘর থেকে বেরিয়ে এসেছে যে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের ডিসি সাহেব এসপি সাহেবের গাড়িও যানজটের মধ্যে পড়ে গিয়েছিল। মানুষ এত শতস্ফুর্ততার সাথে বেরিয়ে আসে ঘর থেকে তারপরও এইটার বিরুদ্ধে বলার জন্য কিছু দুষ্ট প্রকৃতির লোক বলার চেষ্টা করে। তিনি আরো বলেন, আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসীরও একটি দিবস আছে তা হলো নৌকাবাইচ। এই নৌকাবাইচও সার্বজনীন। নৌকাবাইচেরও ধর্মান্ধরা বিরোধিতা করছে। তিনি চ্যালেঞ্জ করে বলেন, যারা বৈশাখী উৎসবের বিরোধিতা করে, যারা নববর্ষ পালনের বিরোধিতা করে, যারা শহিদ মিনারে যাওয়ার বিরোধিতা করে, যারা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে মাল্যদানের বিরুদ্ধে বলে তারা ইসলামের কিছুই জানেনা। তারা জানেই না কোরআন শরিফেও ভাস্কর্যের কথা বলা আছে। শহিদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ভাষা চত্বরকে আধুনিকায়ন করার জন্য সংস্কৃতি কর্মীদের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে আগামী দুই বছরের মধ্যে এই ভাষা চত্বরটি আধুনিকায়নের মাধ্যমে একটি স্কয়ারে রূপান্তরিত করবেন বলে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন। প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যের শেষে সাহিত্য একাডেমির ৭ দিনব্যাপী ৩৮তম বৈশাখী উৎসবের শুভ ঘোষণা করেন।

এছাড়াও ৭ দিনব্যাপী বৈশাখী উৎসব উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন (বিপিএম- সেবা), ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার মেয়র মিসেস নায়ার কবির, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আ. কুদদূস, ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডা. আবু সাঈদ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. বাহারুল ইসলাম মোল্লা।

আলোচনায় স্বাগত বক্তব্য দেন সাহিত্য একাডেমির সাধারণ সম্পাদক নূরুল আমিন এবং শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন ভাষা ও সাহিত্য অনুশীলন কেন্দ্রের সভাপতি এস.আর.এম ওসমান গণি সজিব। আলোচনা শেষে পাপিয়া চৌধুরীর পরিচালনায় ও জিয়ামিন এর নির্দেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন সুর সম্রাট দি আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Md Al Mamun

জনপ্রিয় খবর

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রায় ১২ হাজার ভারতীয় ইয়াবাসহ ২ মাদক ব্যবসায়িক আটক

সাহিত্য একাডেমির আয়োজনে ৭ দিনব্যাপী বৈশাখী উৎসব উদ্বোধন করেন: গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী 

Update Time : ০৭:১০:৪৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৪

গ্রাম বাংলার লোকজ-ঐতিহ্য বা বিভিন্ন ধরনের লোকগান কিংবা লোকজ সংস্কৃতি প্রচার ও প্রদর্শনীর মাধ্যমে বৈশাখী উৎসবের আন্তরিক প্রয়াসের পরিচয় মেলে। শিশুদের জন্য মাটির পুতুল, ঠুলি, চুলা, ডুগডুগিসহ নানা বাহারের জিনিসপত্রের এক সমাহারে পরিণত হয়েছে এই উৎসব। সাহিত্য একাডেমি ১৩৯০ বাং (১৯৮৩ খ্র.) প্রতিষ্ঠার ৪ বছর পর ১৩৯৪ বাং (১৯৮৭ খ্র.) থেকে স্থানীয় শহিদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ভাষা চত্বর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া ইন্ডাস্ট্রিয়েল স্কুল) মাঠে ৭ দিনব্যাপী বৈশাখী উৎসব করে আসছে যা পর্যায়ক্রমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মানুষের প্রাণের উৎসবে পরিণত হয়েছে। প্রতিবছরের মত এবারও উৎসবে প্রায় ২০টি নানান ধরনের লোকজ স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

উৎসবের সূচনাপর্বে সাহিত্য একাডেমির প্রশিক্ষণ বিভাগের শিক্ষার্থীদের নববর্ষের গান ও নৃত্য এবং ভাষা ও সাহিত্য অনুশীলন কেন্দ্রের দলীয় আবৃত্তি ও নৃত্য পরিবেশনায় উৎসবটি শুরু হয়। রবিবার সন্ধ্যায় সাড়ে ছয়টায় বৈশাখী উৎসবের উদ্বোধনী দিনে হাজার দর্শকের উপস্থিতিতে সাহিত্য একাডেমির সভাপতি কবি জয়দুল হোসেনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজান্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী।

প্রধান অতিথি প্রদীপ প্রজ্জ্বালনের মাধ্যমে তাঁর বক্তব্যে বলেন, ধর্ম, বর্ণ, গাত্র ও বংশ পরিচয় যাই হোক না কেন সকলে মিলে পালন করার যে দিবসটি পালন করা হয় সেটি হল বাংলা নববর্ষ ও শহিদ দিবস। সার্বজনীনতা সত্বেও আমাদের মধ্যে কিছু লোক আছে এরা এক ধরনের মানুষ, যাদেরকে মানুষ বলাও শোভা পায় না। এদেরকে এখনো পাকিস্তানের মুণ্ড ঘাড়ে চেপে আছে। এরা মানুষেয় মাঝে ধর্মান্ধতা ছড়িয়ে মানুষের মাঝে বিভেদ সৃষ্টি করতে চায়। কতভাবে যে আপনাকে বিভ্রান্তের চেষ্টা করবে। অথচ দেখেন আজকে এই আনন্দ উৎসব পালন করার জন্য এত মানুষ ঘর থেকে বেরিয়ে এসেছে যে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের ডিসি সাহেব এসপি সাহেবের গাড়িও যানজটের মধ্যে পড়ে গিয়েছিল। মানুষ এত শতস্ফুর্ততার সাথে বেরিয়ে আসে ঘর থেকে তারপরও এইটার বিরুদ্ধে বলার জন্য কিছু দুষ্ট প্রকৃতির লোক বলার চেষ্টা করে। তিনি আরো বলেন, আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসীরও একটি দিবস আছে তা হলো নৌকাবাইচ। এই নৌকাবাইচও সার্বজনীন। নৌকাবাইচেরও ধর্মান্ধরা বিরোধিতা করছে। তিনি চ্যালেঞ্জ করে বলেন, যারা বৈশাখী উৎসবের বিরোধিতা করে, যারা নববর্ষ পালনের বিরোধিতা করে, যারা শহিদ মিনারে যাওয়ার বিরোধিতা করে, যারা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে মাল্যদানের বিরুদ্ধে বলে তারা ইসলামের কিছুই জানেনা। তারা জানেই না কোরআন শরিফেও ভাস্কর্যের কথা বলা আছে। শহিদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ভাষা চত্বরকে আধুনিকায়ন করার জন্য সংস্কৃতি কর্মীদের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে আগামী দুই বছরের মধ্যে এই ভাষা চত্বরটি আধুনিকায়নের মাধ্যমে একটি স্কয়ারে রূপান্তরিত করবেন বলে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন। প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যের শেষে সাহিত্য একাডেমির ৭ দিনব্যাপী ৩৮তম বৈশাখী উৎসবের শুভ ঘোষণা করেন।

এছাড়াও ৭ দিনব্যাপী বৈশাখী উৎসব উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন (বিপিএম- সেবা), ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার মেয়র মিসেস নায়ার কবির, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আ. কুদদূস, ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডা. আবু সাঈদ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. বাহারুল ইসলাম মোল্লা।

আলোচনায় স্বাগত বক্তব্য দেন সাহিত্য একাডেমির সাধারণ সম্পাদক নূরুল আমিন এবং শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন ভাষা ও সাহিত্য অনুশীলন কেন্দ্রের সভাপতি এস.আর.এম ওসমান গণি সজিব। আলোচনা শেষে পাপিয়া চৌধুরীর পরিচালনায় ও জিয়ামিন এর নির্দেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন সুর সম্রাট দি আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গন।