Brahmanbaria ০১:৫৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Last News :
কসবায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মা ও ছেলের মৃত্যু! নবীনগরে  ভ্রাম্যমান আদালতের  অভিযান তিন শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ তরী বাংলাদেশ বিজয়নগর উপজেলা আহবায়ক কমিটি গঠন। বিজয়নগরে বাবার বিরুদ্ধে ৯ বছরের মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জেলা আওয়ামী লীগের নতুন কমিটির ১৮ জন সদস্যকে সংবর্ধণা প্রদান  সালিশে অভিযোগে নারীকে নির্যাতন,বর্তমান ও সাবেক ইউপি সদস্য আটক! নাসিরনগরে যৌন নিপিড়ন মামলার আসামি বাঁচাতে প্রধান শিক্ষকের কৌশল স্বাধীনতা বিরোধীদের প্রেতাত্মারা কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত: আইনমন্ত্রী ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১৯ মামলার পলাতক আসামি গ্রেফতার! ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের বাৎসরিক কর্ম মূল্যায়ন ও সংবর্ধনা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাব রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের অফিস সহকারীর ৮ বছরের কারাদণ্ড 

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা সাব রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের অফিস সহকারী পিয়ন ইয়াছিন মিয়াকে দুর্নীতির দায়ে ৮ বছরের সশ্রম কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। এসময় আদালত তাকে ৫ কোটি ৩০ লাখ টাকা অর্থদন্ড দিয়েছেন। মঙ্গলবার (২৮ মে) বিকেলে কুমিল্লার স্পেশাল জজ (সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ) সামছুন্নাহার এই কারাদন্ডের রায় দিয়েছেন।
ইয়াছিন মিয়া  (৪৫) জেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার তাতুয়াকান্দি গ্রামের বাসিন্দা। তবে পরিবার নিয়ে তিনি জেলা শহরের ভাদুঘর হুজুর বাড়ি শেখ বাড়ি এলাকায় বসবাস করতেন।
দুদকের সহকারী পরিচালক এইচ এম আখতারুজ্জামান ২০১৯ সালের ১০ ডিসেম্বর ইয়াছিনের বিরুদ্ধে ১৯৪৭সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় কুমিল্লা দুদকের সমন্বিত কার্যালয়ের মামলা দায়ের করেন।ওই মামলায় কুমিল্লা স্পেশাল জজ (সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ) সামছুন্নাহার দুর্নীতির দায়ে ইয়াছিনকে ৫ কোটি ৩০ লাখ ৮৩ হাজার ৭৭২ টাকা অর্থদন্ড ও আট বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ড দিয়েছেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কুমিল্লার সমন্বিত কার্যালয়ে দায়ের করার মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ইয়াছিন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর সাব রেজিষ্ট্রার কার্যালয়ে অফিস সহায়ক (পিয়ন)  পদে কর্মরত ছিল। ২০১৪ সালের ৭ এপিল থেকে ২০১৯সালের ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত স্বাক্ষর জাল করে নকল চালান ও তালিকা সৃজনপূর্বক ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর সাব রেজিষ্ট্রার কার্যালয়ের ক্যাশ বই, ফি বইসহ  বিভিন্ন রেজিস্ট্রেশন ফি, তল্লাশী ফি ও নকলের ফিস বাবদ ৫ কোটি ৭৭ লাখ ২৫ হাজর ৫৩৯ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা না দিয়ে অপরাধমূলক অসদাচরণ ও অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গের মাধ্যমে করেছে। এতে তিনি দন্ডবিধির  ৪২০, ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭১ ও ৪০৯তৎসহ ১৯৪৭সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
২০১৯ সালের ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রাম নিবন্ধন অধিদপ্তরের ইন্সপেক্টর রেজিস্ট্রার অফিসার (আইআরও) নৃপেন্দ্র নাথ সিকদার ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেজিস্ট্রার কার্যালয়, সদর রেকর্ড রুম, সদর সাব রেজিস্ট্রার কার্যালয় পরিদর্শন করেন। তিনি পর্যায়ক্রমে সদর সাব রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের ক্যাশবই, ফি বইসহ অন্যান্য রেজিস্ট্রার বইসমূহ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। ক্যাশ বই পরীক্ষা শেষে কিছু চালানের কপি অফিস সহকারীকে আনতে বলেন ওই কর্মকর্তা।অফিস সহকারী শামসুল আলম ও অফিস সহায়ক মো. ইয়াছিন একগুচ্ছ চালানের কপি নিবন্ধন পরিদর্শক কর্মকর্তার কাছে উপস্থাপন করেন। তিনি চালানের কপিগুলো এক এক করে পরীক্ষা নিরীক্ষা করেন। এক পর্যায়ে চালানের অনলাইন ভেরিফিকেশন করে ক্যাশ বইয়ে এন্ট্রির সাথে আদায়কৃত রাজস্বের মিল না পাওয়ায় তার সন্দেহ হয়। তৎকালীন সাব রেজিস্ট্রার মোস্তাফিজুর রহমানও ক্যাশবই ও বেশ কয়েকটি চালান অনলাইন ভেরিফিকেশন করে কার্যালয়ে থাকা চালানের সঙ্গে মিল পাননি।
সোনালী ব্যাংকের ব্রাহ্মণবাড়িয়া শাখার ব্যবস্থাপক মোস্তাফিজের দেখানো চালানের কপি দেখে জানান যে, সেগুলো ব্যাংক কর্তৃক ইস্যু করা হয়নি। সাব রেজিস্ট্রার তখন বুঝতে পারেন যে, পিয়ন ইয়াছিন নগদে আদায়কৃত সরকারি রাজস্ব ব্যাংকে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেছেন। নৃপেন্দ্র নাথ সিকদার ওই বছরের ২৯ নভেম্বর সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। তিনি ২০১৪ সালের ৭ এপ্রিল থেকে ২০১৯ সালের ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত সময়ের ব্যাংক চালান এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর সাব রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের ক্যাশ বই, ফি বইসহ  বিভিন্ন রেজিস্ট্রেশন বইসমূহ পর্যালোচনা করে জানতে পারেন যে, পিয়ন ইয়াছিন সাড়ে চার বছর পর্যন্ত রেজিস্ট্রেশন ফি, তল্লাশী ফি ও নকলের ফিস বাবদ আদায়ৃকত অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা না দিয়ে স্বাক্ষর জাল করে নকল চালান ও তালিকা সৃজন করে ৫ কোটি ৭৭ লাখ ২৫ হাজর ৫৩৯ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেছেন।
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় খবর

কসবায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মা ও ছেলের মৃত্যু!

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাব রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের অফিস সহকারীর ৮ বছরের কারাদণ্ড 

Update Time : ০৬:৪৯:৪২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ মে ২০২৪
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা সাব রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের অফিস সহকারী পিয়ন ইয়াছিন মিয়াকে দুর্নীতির দায়ে ৮ বছরের সশ্রম কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। এসময় আদালত তাকে ৫ কোটি ৩০ লাখ টাকা অর্থদন্ড দিয়েছেন। মঙ্গলবার (২৮ মে) বিকেলে কুমিল্লার স্পেশাল জজ (সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ) সামছুন্নাহার এই কারাদন্ডের রায় দিয়েছেন।
ইয়াছিন মিয়া  (৪৫) জেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার তাতুয়াকান্দি গ্রামের বাসিন্দা। তবে পরিবার নিয়ে তিনি জেলা শহরের ভাদুঘর হুজুর বাড়ি শেখ বাড়ি এলাকায় বসবাস করতেন।
দুদকের সহকারী পরিচালক এইচ এম আখতারুজ্জামান ২০১৯ সালের ১০ ডিসেম্বর ইয়াছিনের বিরুদ্ধে ১৯৪৭সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় কুমিল্লা দুদকের সমন্বিত কার্যালয়ের মামলা দায়ের করেন।ওই মামলায় কুমিল্লা স্পেশাল জজ (সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ) সামছুন্নাহার দুর্নীতির দায়ে ইয়াছিনকে ৫ কোটি ৩০ লাখ ৮৩ হাজার ৭৭২ টাকা অর্থদন্ড ও আট বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ড দিয়েছেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কুমিল্লার সমন্বিত কার্যালয়ে দায়ের করার মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ইয়াছিন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর সাব রেজিষ্ট্রার কার্যালয়ে অফিস সহায়ক (পিয়ন)  পদে কর্মরত ছিল। ২০১৪ সালের ৭ এপিল থেকে ২০১৯সালের ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত স্বাক্ষর জাল করে নকল চালান ও তালিকা সৃজনপূর্বক ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর সাব রেজিষ্ট্রার কার্যালয়ের ক্যাশ বই, ফি বইসহ  বিভিন্ন রেজিস্ট্রেশন ফি, তল্লাশী ফি ও নকলের ফিস বাবদ ৫ কোটি ৭৭ লাখ ২৫ হাজর ৫৩৯ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা না দিয়ে অপরাধমূলক অসদাচরণ ও অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গের মাধ্যমে করেছে। এতে তিনি দন্ডবিধির  ৪২০, ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭১ ও ৪০৯তৎসহ ১৯৪৭সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
২০১৯ সালের ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রাম নিবন্ধন অধিদপ্তরের ইন্সপেক্টর রেজিস্ট্রার অফিসার (আইআরও) নৃপেন্দ্র নাথ সিকদার ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেজিস্ট্রার কার্যালয়, সদর রেকর্ড রুম, সদর সাব রেজিস্ট্রার কার্যালয় পরিদর্শন করেন। তিনি পর্যায়ক্রমে সদর সাব রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের ক্যাশবই, ফি বইসহ অন্যান্য রেজিস্ট্রার বইসমূহ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। ক্যাশ বই পরীক্ষা শেষে কিছু চালানের কপি অফিস সহকারীকে আনতে বলেন ওই কর্মকর্তা।অফিস সহকারী শামসুল আলম ও অফিস সহায়ক মো. ইয়াছিন একগুচ্ছ চালানের কপি নিবন্ধন পরিদর্শক কর্মকর্তার কাছে উপস্থাপন করেন। তিনি চালানের কপিগুলো এক এক করে পরীক্ষা নিরীক্ষা করেন। এক পর্যায়ে চালানের অনলাইন ভেরিফিকেশন করে ক্যাশ বইয়ে এন্ট্রির সাথে আদায়কৃত রাজস্বের মিল না পাওয়ায় তার সন্দেহ হয়। তৎকালীন সাব রেজিস্ট্রার মোস্তাফিজুর রহমানও ক্যাশবই ও বেশ কয়েকটি চালান অনলাইন ভেরিফিকেশন করে কার্যালয়ে থাকা চালানের সঙ্গে মিল পাননি।
সোনালী ব্যাংকের ব্রাহ্মণবাড়িয়া শাখার ব্যবস্থাপক মোস্তাফিজের দেখানো চালানের কপি দেখে জানান যে, সেগুলো ব্যাংক কর্তৃক ইস্যু করা হয়নি। সাব রেজিস্ট্রার তখন বুঝতে পারেন যে, পিয়ন ইয়াছিন নগদে আদায়কৃত সরকারি রাজস্ব ব্যাংকে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেছেন। নৃপেন্দ্র নাথ সিকদার ওই বছরের ২৯ নভেম্বর সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। তিনি ২০১৪ সালের ৭ এপ্রিল থেকে ২০১৯ সালের ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত সময়ের ব্যাংক চালান এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর সাব রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের ক্যাশ বই, ফি বইসহ  বিভিন্ন রেজিস্ট্রেশন বইসমূহ পর্যালোচনা করে জানতে পারেন যে, পিয়ন ইয়াছিন সাড়ে চার বছর পর্যন্ত রেজিস্ট্রেশন ফি, তল্লাশী ফি ও নকলের ফিস বাবদ আদায়ৃকত অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা না দিয়ে স্বাক্ষর জাল করে নকল চালান ও তালিকা সৃজন করে ৫ কোটি ৭৭ লাখ ২৫ হাজর ৫৩৯ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেছেন।