ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আসামী ধরতে গিয়ে প্রকাশ্যে পিস্তল উঁচিয়ে নারীর কপালে ঠেকানোর ঘটনায় আদালতে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার তিন দিন পর আজ সোমবার সৌদি প্রবাসী নুরুল আলম নুরুর স্ত্রী বন্যা বেগম নামের ওই ভুক্তভোগী এ অভিযোগ দায়ের করেন। তবে আদালতে মামলাটি নথিভূক্ত হয়নি।
বাদীপক্ষের আইনজীবী শওকত আলী জানান, অভিযোগে পুলিশ কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিমসহ তার আট সহকর্মীকে আসামি করা হয়। তবে সহকর্মীদের নাম উল্লেখ করা হয়নি। মামলায় বন্যা বেগমের স্বামীর বিরুদ্ধে দায়ের করা বাদীপক্ষের কয়েকজনকেও আসামি করা হয়েছে।
মূল আসামি হলেন এনামুল কবীর, যিনি পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে এসে এ ঘটনা ঘটান। তিনি আরো জানান, সোমবার দুপুরে মামলার কপি আদালতে জমা দেওয়া হয়। তবে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত (দ্রুত বিচার আইন) এ বিষয়ে কোনো আদেশ দেননি কিংবা শুনানি বিষয়েও কিছু বলেননি। মামলাটি নথিভুক্ত হয়নি।
এদিকে এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির তদন্ত কার্যক্রম সোমবার সকাল থেকে শুরু করেছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) মো. জয়নাল আবেদীনকে প্রধান করে গঠিত তদন্ত কমিটিতে রয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল বিল্লাল হোসেন ও পুলিশ সুপার কার্যালয়ের ওসি ক্রাইম হাবিবুল্লাহ বাহার।
তদন্ত টীমের প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিশেষ শাখা মো. জয়নাল আবেদীন সোমবার জানান, আমরা তদন্ত শুরু করেছি। ঘটনাটির আইনগত সকল বিষয় দেখছি।
ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্ট কয়েকজনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের বক্তব্য শোনা হচ্ছে, তারা কি মূলে কিভাবে ঘটনাস্থলে গিয়েছে সে সব দেখা হচ্ছে। আশা করছি ৩ কার্যদিবসেই প্রতিবেদন দিতে পারবো।
পুলিশ সুপার মো. শাখাওয়াত হোসেন বলেন, এ ঘটনায় তদন্ত শুরু হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, স্বর্ণ আত্মসাতের অভিযোগে শুক্রবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার নাটাই উত্তর ইউনিয়নের থলিয়ারা গ্রামের সৌদি প্রবাসী নূরুল আলম নূরুকে গ্রেফতারে সাদা পোশাকে অভিযান চালায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এসআই রেজাউল করিমসহ আরো কয়েকজন। ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ, সাদা পোশাকে গোয়েন্দা পুলিশের পরিচয়ে একদল লোক নুরুলকে খুঁজতে বাসায় আসে। তারা তাকে না পেয়ে আক্রমানাত্মক হয়ে উঠে। এসময় অনুষ্ঠানে আসা বাড়িতে উপস্থিত নারীসহ অন্যদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি হয়। তারা নুরুল ইসলামের স্ত্রী, সন্তান, বৃদ্ধ পিতাসহ পরিবারের অন্যান্য লোকজনকে মারধর ও শারিরীক ভাবে লাঞ্চিত করে। এক পর্যায়ে প্রবাসীর স্ত্রী বন্যার কপালে দিকে প্রকাশ্যে পিস্তলতাক করে সাদা পোশাকে আসা গোয়েন্দা পুলিশের এসআই রেজাউল করিম। এছাড়া ফাঁকা গুলিও ছুঁড়ে।