Brahmanbaria ০৫:৪৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Last News :
বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের হেনস্থা বন্ধসহ শ্রেণীকক্ষের শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করা দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মানববন্ধন  ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিপুল পরিমাণ ফেনসিডিলসহ ৩ জন মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার সরকারি চাকরি দেওয়ার নামে অভিনব পন্থায় কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ট্রেনের ধাক্কায় ছাত্রদল নেতা নিহত ব্রাহ্মণবাড়িয়া ব্র্যাক এরিয়া সেলস্ সেন্টারের কৃত্রিম প্রজনন সেবাকর্মীর মৃত্যুর চেক প্রধান বিদ্যালয়ে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশের দাবীতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ও মানববন্ধন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আওয়ামীলীগ নেতাকে গ্রেপ্তারের দাবিতে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি বিজয়নগরে ভিক্ষুক মহিলাকে কুপিয়ে হত্যা সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকসহ ৯ জনের নামে আদালতে অভিযোগ দায়ের  নারীসহ স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকে পুলিশে দিলেন স্ত্রী

বিজয়নগরে তৈরি হচ্ছে আখের রসের লালি

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৬:০০:৪৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৪
  • ৪৯৮ Time View
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে বর্তমানে বিভিন্ন ফল ফ্রুটে ও পর্যটনে সারা বাংলাদেশে সুনামের সাথে  প্রচারে বিস্তার লাভ করলেও বর্তমানে আখের রসের লালি গুড় বিজয়নগরকে আরো বেশি প্রসিদ্ধ করে গড়ে তুলেছে।
 এবছর ১ কোটি  টাকারও বেশি মূল্যের লালি বিক্রি হবে বলে আশা করছেন স্থানীয়  কৃষি বিভাগ। মূলত উৎপাদনে খরচ  বাড়ায় এবং আখ চাষ কমে যাওয়ায় লালির উৎপাদন কমেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
কৃষি বিভাগের দেওয়া তথ্য মতে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর, কসবা ও আখাউড়া উপজেলার কিছু এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে আখ চাষ করা হয়। এসব আখের রস থেকে লালি উৎপাদন করেন চাষীরা। চলতি বছর বিজয়নগরে  ২৫ হেক্টর জমিতে আখের চাষ হয়েছে।  এ উপজেলার ২৫ হেক্টর জমিতে চাষ করা আখ থেকে অন্তত ১শ টনেরও বেশি  লালি উৎপাদন  হবে আশা করছে কৃষি বিভাগ। যার বাজারমূল্য ১ কোটি ৩০ লক্ষ  টাকারও বেশি।
এই প্রসিদ্ধ লালিগুড় বিজয়নগর উপজেলার বিষ্ণুপুর, দুলালপুর ও বক্তারমুড়া গ্রামের অর্ধশতাধিক পরিবার বাণিজিক্যভাবে লালি উৎপাদন করে আসছে। প্রতিবছর শীতের শুরুতে লালি তৈরির কাজ শুরু করে পরিবারগুলো। মূলত নভেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত  চলে লালি তৈরি ও কেনাবেচা।
এই লালি কেনার জন্য বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষজন আসছেন বিজয়নগরে। লালির উৎপাদন দেখতে রীতিমতো ভিড় জমাচ্ছেন দর্শনার্থীরা। অনেকে লালি নেওয়ার পাশাপাশি আখের রসও খেয়ে যাচ্ছেন। প্রতিদিন ভোর থেকে সন্ধ্যা পযর্ন্ত চলে লালি তৈরির কার্যক্রম।আর এই লালিগুড় বানানোর প্রথমে আখ মাড়াই, এবং মহিষের চোখ ঢেকে ঘানি টানানোর মাধ্যমে আখ মাড়াই করে রস সংগ্রহ করা হয়। এরপর রস জমিয়ে ছাকনি দিয়ে ছেকে কড়াইয়ে রেখে দুই থেকে তিন ঘণ্টা আগুনে জাল দিয়ে ঘন করা হয়। সেই রস লাল রং ধারণ করলে নামানো হয় কড়াই থেকে।
বিষ্ণুপুর গ্রামের মঞ্জু আক্তার বলেন, এই লালির মৌসুমে আমাদের এলাকায় খুবই আমোদ প্রমোদে  দিন কাটাই। লালি উৎপাদনের সময় কড়াই থেকে গরম লালি নিয়ে, যে যতটুকু খেতে পারে তাতে কোন মূল্য দিতে হয় না। আমরা অনেক আনন্দের সহিত প্রতিদিন এই লালি উৎপাদনের দেখি ও খেয়ে থাকি। নতুন নতুন ক্রেতারা অনেক সময় গরম লালি খরিদ করতে আসেন।
বক্তামুরার সাত্তার মিয়া বলেন, কয়েক বছর আগেও গ্রামের অধিকাংশ মানুষ আখ চাষ করত। কিন্তু দিন দিন আখ চাষীর সংখ্যা কমে যাচ্ছে। আখ কাটা ও মাড়াইয়ের কাজে শ্রমিকের মজুরি বেড়েছে। ঘানি টানানোর জন্য লাখ টাকা বা তার বেশি দিয়ে মহিষ কিনতে হচ্ছে, তাই চাষিরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে।
এ বিযয়ে  বিজয়নগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সাব্বির আহমেদ জানান, আমাদের কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের তেমন কোনো সহযোগিতা করা হয়নি, শুধু পরামর্শ দিয়ে আসছি। তবে যদি সরকারি ভাবে তাদের প্রতি নজর দেওয়া হলে, তাহলে নতুন আগ্রহীরা এই লালি গুড় তৈরিতে আগ্রহ বাড়বে। তাতে আমাদের দেশের জন্য আরোও লাভজনক হবে। আমরা চেষ্টা করছি উৎপাদন বাড়ানোর প্রক্রিয়া অবলম্বন করার জন্য। তবে বর্তমানে উৎপাদন কমেনি, আগে যারা এই পেশায় জড়িত ছিল তারাই আছেন।
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Md Al Mamun

জনপ্রিয় খবর

বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের হেনস্থা বন্ধসহ শ্রেণীকক্ষের শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করা দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মানববন্ধন 

বিজয়নগরে তৈরি হচ্ছে আখের রসের লালি

Update Time : ০৬:০০:৪৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৪
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে বর্তমানে বিভিন্ন ফল ফ্রুটে ও পর্যটনে সারা বাংলাদেশে সুনামের সাথে  প্রচারে বিস্তার লাভ করলেও বর্তমানে আখের রসের লালি গুড় বিজয়নগরকে আরো বেশি প্রসিদ্ধ করে গড়ে তুলেছে।
 এবছর ১ কোটি  টাকারও বেশি মূল্যের লালি বিক্রি হবে বলে আশা করছেন স্থানীয়  কৃষি বিভাগ। মূলত উৎপাদনে খরচ  বাড়ায় এবং আখ চাষ কমে যাওয়ায় লালির উৎপাদন কমেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
কৃষি বিভাগের দেওয়া তথ্য মতে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর, কসবা ও আখাউড়া উপজেলার কিছু এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে আখ চাষ করা হয়। এসব আখের রস থেকে লালি উৎপাদন করেন চাষীরা। চলতি বছর বিজয়নগরে  ২৫ হেক্টর জমিতে আখের চাষ হয়েছে।  এ উপজেলার ২৫ হেক্টর জমিতে চাষ করা আখ থেকে অন্তত ১শ টনেরও বেশি  লালি উৎপাদন  হবে আশা করছে কৃষি বিভাগ। যার বাজারমূল্য ১ কোটি ৩০ লক্ষ  টাকারও বেশি।
এই প্রসিদ্ধ লালিগুড় বিজয়নগর উপজেলার বিষ্ণুপুর, দুলালপুর ও বক্তারমুড়া গ্রামের অর্ধশতাধিক পরিবার বাণিজিক্যভাবে লালি উৎপাদন করে আসছে। প্রতিবছর শীতের শুরুতে লালি তৈরির কাজ শুরু করে পরিবারগুলো। মূলত নভেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত  চলে লালি তৈরি ও কেনাবেচা।
এই লালি কেনার জন্য বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষজন আসছেন বিজয়নগরে। লালির উৎপাদন দেখতে রীতিমতো ভিড় জমাচ্ছেন দর্শনার্থীরা। অনেকে লালি নেওয়ার পাশাপাশি আখের রসও খেয়ে যাচ্ছেন। প্রতিদিন ভোর থেকে সন্ধ্যা পযর্ন্ত চলে লালি তৈরির কার্যক্রম।আর এই লালিগুড় বানানোর প্রথমে আখ মাড়াই, এবং মহিষের চোখ ঢেকে ঘানি টানানোর মাধ্যমে আখ মাড়াই করে রস সংগ্রহ করা হয়। এরপর রস জমিয়ে ছাকনি দিয়ে ছেকে কড়াইয়ে রেখে দুই থেকে তিন ঘণ্টা আগুনে জাল দিয়ে ঘন করা হয়। সেই রস লাল রং ধারণ করলে নামানো হয় কড়াই থেকে।
বিষ্ণুপুর গ্রামের মঞ্জু আক্তার বলেন, এই লালির মৌসুমে আমাদের এলাকায় খুবই আমোদ প্রমোদে  দিন কাটাই। লালি উৎপাদনের সময় কড়াই থেকে গরম লালি নিয়ে, যে যতটুকু খেতে পারে তাতে কোন মূল্য দিতে হয় না। আমরা অনেক আনন্দের সহিত প্রতিদিন এই লালি উৎপাদনের দেখি ও খেয়ে থাকি। নতুন নতুন ক্রেতারা অনেক সময় গরম লালি খরিদ করতে আসেন।
বক্তামুরার সাত্তার মিয়া বলেন, কয়েক বছর আগেও গ্রামের অধিকাংশ মানুষ আখ চাষ করত। কিন্তু দিন দিন আখ চাষীর সংখ্যা কমে যাচ্ছে। আখ কাটা ও মাড়াইয়ের কাজে শ্রমিকের মজুরি বেড়েছে। ঘানি টানানোর জন্য লাখ টাকা বা তার বেশি দিয়ে মহিষ কিনতে হচ্ছে, তাই চাষিরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে।
এ বিযয়ে  বিজয়নগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সাব্বির আহমেদ জানান, আমাদের কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের তেমন কোনো সহযোগিতা করা হয়নি, শুধু পরামর্শ দিয়ে আসছি। তবে যদি সরকারি ভাবে তাদের প্রতি নজর দেওয়া হলে, তাহলে নতুন আগ্রহীরা এই লালি গুড় তৈরিতে আগ্রহ বাড়বে। তাতে আমাদের দেশের জন্য আরোও লাভজনক হবে। আমরা চেষ্টা করছি উৎপাদন বাড়ানোর প্রক্রিয়া অবলম্বন করার জন্য। তবে বর্তমানে উৎপাদন কমেনি, আগে যারা এই পেশায় জড়িত ছিল তারাই আছেন।