ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের একটি ব্যায়ামাগারে (জিম) গোপনে আপত্তিকর ভিডিও ধারণের প্রতিবাদ করায় আটকে এক গৃহবধূসহ দুইজনকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার (৩০ আগষ্ট) সন্ধ্যায় শহরের মৌলভীপাড়ায় বিএস ফিটনেস ক্লাব নামক একটি জিমে এই ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর ৯৯৯’এ কল করলে তাদেরকে উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে জিমের পরিচালক জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি হাবিবুল্লাহ ভূইয়া বিপ্লব, জিমের ফিটনেস ট্রেইনার মিতু আক্তার ও সাইম নামের একজনকে গ্রেপ্তার করেছে সদর মডেল থানা পুলিশ।
- এই ঘটনা রাতে ওই গৃহবধূর ভাসুর ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতের এপিপি মাসুদুর রহমান (সোহাগ) গ্রেপ্তারকৃত তিনজন সহ ৪জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৮/৯জনকে আসামী করে সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছেন। রাতে মামলা নথিভুক্ত করার পর ওই মামলায় তাদেরকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ।
লিখিত অভিযোগ ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ওই গৃহবধূ ও তার বোন শহরের মৌলভীপাড়ায় বিএস ফিটনেস সেন্টারে নিয়মিত ব্যায়াম করেন। সেখানে মেয়েদের ব্যায়াম করার আলাদা ব্যবস্থা ও পুরুষ যাওয়ার অনুমতি না থাকায় দুই বোন সেখানে ভর্তি হয়েছিলেন। তবে জিমের ট্রেইনার মিতু আক্তার গোপনে ভিডিও ধারণ করেন বলে তাদের সন্দেহ হয়। গত দুইদিন আগে তারা নিশ্চিত হন ট্রেইনার মিতু গোপনে তাদের ভিডিও ধারণ করেছে। বুধবার বিকেলে তারা দুই বোন ট্রেইনার মিতুকে ভিডিও করার কথা জিজ্ঞেস করলে উভয়ের মধ্যে বাকবিন্ডা হয়। পরে ট্রেইনার মিতু জিমের পরিচালক জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি হাবিবুল্লাহ ভূইয়া বিপ্লবকে জানায়। এই খবর পেয়ে বিপ্লব তাদের দুই বোনের কাছে যান মিতুকে নিয়ে। সেখানে মিতু ওই গৃহবধূর চুলের মুঠি ধরে মারধর শুরু করে। একপর্যায়ে জিমে থাকায় শহরের উত্তর পৈরতলার সোহেল মিয়া নামের এক যুবক তাদেরকে বাঁচাতে আসলে বিপ্লবসহ তার সহযোগীরা তাদের সবাইকে লোহার রড দিয়ে বেদরক মারধর করে আটকে রাখে। এই অবস্থায় তাদের পরিবারের লোকজন এলে জিমের ভেতরে ঢুকতে পারেনি। আশপাশের সড়কে উৎসুক মানুষ জমায়েত হয়ে ভিডিও করে ঘটনাটি ফেসবুকে দেয়।
শেষে ৯৯৯’ এ কল দিলে সদর মডেল থানা পুলিশ এসে মারধোরে শিকার দুই বোন ও সোহেলকে উদ্ধার করে। গণরোষানল থেকে বাঁচাতে জিমের পরিচালক জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি হাবিবুল্লাহ ভূইয়া বিপ্লব, ট্রেইনার মিতু আক্তার ও সাইম নামের একজনকে পুলিশ আটক করে থানায় নিয়ে যায়। গুরুতর আহত হওয়ায় ওই গৃহবধূ ও সহায়তা করতে আসা সোহেলকে হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসলাম হোসাইন জানান, জীমে দুই বোনের ছবি উঠানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠে। এ ঘটনায় ওই জীমের মালিক ট্রেইনার পক্ষের লোকজনদের সাথে ওই দুই নারীর পরিবারের লোকজনদের ঝগড়া হয়। এসময় বেশ কয়েকজন আহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ জীমে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। ‘জিমের ঘটনায় ভুক্তভোগি নারীর পরিবারের পক্ষ থেকে ৪জনের নাম উল্লেখ সহ অজ্ঞাত আরও ৮/৯জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করা হয়। এ ঘটনায় জিমের পরিচালক জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি হাবিবুল্লাহ ভূইয়া বিপ্লবসহ তিনজনকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।