বাংলাদেশের শোকের মাস আগস্ট। শোকের মাসে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ মাসব্যাপী নানান কর্মসূচি পালন করে আসছে। এই বছরও ৩১ জুলাই এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে দেশের প্রতিটি ইউনিটকে একই নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাংসদ। কিন্তু কেন্দ্রীয় এই নির্দেশনা পালন করেনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলা ছাত্রলীগ। উপজেলা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে আলাদাভাবে দেওয়া হয়নি কোন শোক কর্মসূচি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান যৌথ সাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে শোক দিবস উপলক্ষে মাসব্যাপী সাংগঠনিক কর্মসূচি ঘোষণা করে। ওই কর্মসূচিতে দেশের প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মিনতি আজ করি পিতা, একবার এসে দেখে যান’ শীর্ষক তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধিদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে প্রতীকী ‘পত্রপ্রেরণ’, দেশব্যাপী শিশুদের বঙ্গবন্ধু চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা আয়োজন বঙ্গবন্ধু স্মারক বক্তৃতা আয়োজন, বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের উপর নির্মিত পথনাটক, মঞ্চনাটক, প্লানচেট বিতর্ক, তথ্য ও ভিডিওচিত্র প্রদর্শনী আয়োজন করতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রতিটি সাংগঠনিক ইউনিটকে যথাযথ মর্যাদার সাথে পালনের আহ্বান করা হয়। কিন্তু এই শোকের মাসে কোন প্রকার আলাদা কর্মসূচির আয়োজনের ঘোষণা দেয়নি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলা ছাত্রলীগ। আগস্ট মাসের প্রথম দিন কোন প্রকার জরুরি কাজ ছাড়া দক্ষিণ আফ্রিকা ভ্রমণে চলে যান উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক আফজাল হোসাইন রিমন। বিদেশে থাকায় গত ৫ আগস্ট শেখ কামালের জন্মদিন ও ৮ আগস্ট বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মদিনের কোন কর্মসূচি পালন করেননি। সংগঠনের অন্যান্য নেতাকর্মীরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের যৌথ ভাবে আয়োজিত কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করছেন।
এদিকে, ১১দিন দক্ষিণ আফ্রিকা ভ্রমণ শেষে শুক্রবার দেশে ফিরেছেন উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক আফজাল হোসাইন রিমন। ভারত হয়ে বিকাল ৩টার দিকে তিনি দেশে আসেন৷ এর আগে, ভারত থেকে ফেসবুকে আগামীকাল ১৫ আগস্ট কর্মসূচি পালন করতে উপজেলা ছাত্রলীগের ইউনিট গুলোকে নির্দেশনা দেন।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক একাধিক উপজেলা ছাত্রলীগ নেতাকর্মী বলেন, আর কয়েক মাস পর নির্বাচন। এছাড়া এই মাসে জারির জনক বঙ্গবন্ধুসহপরিবারের ১৮জনকে হত্যা করে ঘাতক করা। তাই মাস ব্যাপী শোক কর্মসূচি পালক করে ছাত্রলীগ। অথচ আহবায়ক শোকের মাসের প্রথম দিন উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক দক্ষিণ আফ্রিকা ভ্রমণে চলে যান। যাওয়ার আগে মাসব্যাপী ছাত্রলীগের কি কর্মসূচি পালন করবে, তা কোন লিখিত নির্দেশনা দেননি। এই মাসের পর ভ্রমণে গেলে কি উনার হতো না?
এই বিষয়ে জানতে চাইলে মুঠোফোনে কসবা উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক আফজাল হোসাইন রিমন বলেন, ‘আমি আজ (১১ আগস্ট) বিকেল ৩টায় ভারত হয়ে দেশে ফিরেছি। আমরা কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশনা অনুযায়ী কর্মসূচি পালন করতে চেয়েছিলাম। অর্থাৎ আমি আগস্ট মাসের পর দেশের বাইরে যেতে চেয়েছিলাম। মন্ত্রী মহোদয় ৯টি ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ সহ সম্মিলিত ভাবে শোক দিবসের কর্মসূচি দিয়েছেন। আগামী ১৫ আগষ্টে শোক দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ অন্য সহযোগী সংগঠন সহ সম্মিলিত ভাবে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। তাই উপজেলা ছাত্রলীগ আলাদা কোন কর্মসূচি দেওয়ার সময় বা সুযোগ নেই।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ আমি কিছুদিন দেশের বাইরে ছিলাম। আমার দুই যুগ্ম আহবায়ক অন্যান্যদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়েছে।’
এই বিষয়ে জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেল বলেন, ‘গত ৩১ জুলাই কেন্দ্রীয় কিছু কর্মসূচির পাশাপাশি দেশজুড়ে ছাত্রলীগ পালন করতে নির্দেশনা দিয়েছে। কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচি অবশ্যই পালন করতে হবে। আমরা সেসব কর্মসূচি পালন করে আসছি। জেলার সব উপজেলা পালন করলেও কসবা উপজেলা ছাত্রলীগের কোন কর্মসূচির বিষয়ে আমার জানা নেই। এই বিষয়ে শোকের মাসে কোন কর্মসূচি প্রণয়ন করেনি।’ এক প্রশ্নের জবাবে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি বলেন, ‘ উপজেলা ছাত্রলীগের কর্মসূচি পালনে জেলাকে জানানোর কথা। কসবা উপজেলা ছাত্রলীগ দেশে বাইরে যাওয়ার আগে আমাদেরকে কিছু জানায়নি। এই বিষয়ে আমরা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগকে অবগত করবো।’