‘আমাদের বাবার হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদন্ড চাই। বাবা হত্যার ন্যায় বিচার না পেলে আমরা চার ভাই একসাথে আত্মহত্যা করব’। এমননি ভাবে কেঁদে কেঁদে বাবার হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধনে কথাগুলো বলছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে প্রতিপক্ষের হাতে নিহত হাফিজ উদ্দিনের চার ছেলে।
আজ শুক্রবার দুপুরে উপজেলার পাকশিমুল ইউনিয়নের হরিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে হাফিজ উদ্দিনের হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন গ্রামবাসী ও নিহতের পরিবার।
মানববন্ধনে স্থানীয় ব্যবসায়ী মুজিবুর রহমান বলেন, হাফিজ উদ্দিন একজন ন্যায় বিচারক ছিলেন। উনার কারণে আমি আমার চুরি যাওয়া দোকানের মালামাল ফেরত পেয়েছি। আমার মালামাল উদ্ধার করতে গিয়ে চোর রায়হানদের হাতে খুন হয়েছেন হাফিজ উদ্দিন ভাই। স্থানীয় বাসিন্দ জাবেদা বিবি (৭০), নুরজাহান বেগম (৫০), আলমগীর হোসেন, সাইফ মিয়া বলেন, হাফিজ উদ্দিন খুব ভাল মানুষ ছিলেন। উনি ছিলেন একজন ন্যায় বিচারক। যার কারণে মাদকসেবনকারী চোরদের হাতে নির্মম ভাবে নিহত হয়েছেন। এই হত্যার সর্বোচ্চ বিচার ফাঁসি চাই।
নিহত হাফিজ উদ্দিনের স্ত্রী ও মামলার বাদী শাহানা আক্তার বলেন, প্রতিপক্ষের লোকজন আবার আমাদের নামে মামলা দিয়েছে। আমরা নাকি ওদের বাড়ি লুট করে বেড়াচ্ছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার স্বামীর হত্যার বিচার চাই।
সরাইল থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বাবুল হোসেন বলেন, মামলার মূল আসামী রায়হানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারের চেস্টা চলছে।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের গত ৯ মে উপজেলার হরিপুর গ্রামের মজিবুর রহমানের মুদি দোকান চুরি হয়। নিহত হাফিজ উদ্দিন সেই চুরির মালামাল সালিসি বৈঠকের মাধ্যমে মজিবুর রহমানকে ফিরিয়ে দেই। তারপর থেকে সালিশে সাব্যস্ত হওয়ার চোর রায়হানসহ তার সহযোগীরা সালিশকারক হাফিজ উদ্দিনের উপর ক্ষিপ্ত হয়। এর জেরেধরে গত ৪ আগষ্ট বিকাল ৫টার দিকে হাফিজ উদ্দিনকে উপজেলার পাকশিমুল ইউনিয়নের হরিপুর গ্রামে মসজিদের কাছে এলোপাতারি ছুরিকাঘাত করে গুরুতর আহত করে প্রতিপক্ষের লোকেরা। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
এ ঘটনায় নিহত হাফিজ উদ্দিনের স্ত্রী বাদী হয়ে গত ৫ আগষ্ট ১১ জনের নামসহ অজ্ঞাত কয়েকজনের নামে হত্যামামলা দায়ের করেন।