আদালতের রায়ের পর আপিল, রিভিউ সহ কোন প্রকার আইনি উদ্যোগ ছাড়াই ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের অর্ধশত বছরের পুরাতন বসত বাড়ির দেয়াল ভেঙ্গে ফেলেছে পৌর কর্তৃপক্ষ।
এ ঘটনায় পৌর মেয়র, কাউন্সিলর সহ তিন জনকে দায়ী করে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী নারী চিকিৎসক। ঘটনাটি শহরজুরে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এই ঘটনায় চিকিৎসক পরিবারটি এখন অনেকটায় নিরাপতাহীনতায় ভুগছে।
এ বিষয়ে মামলার বাদী ও প্রয়াত চিকিৎসক ডা: আব্দুল খালেকের স্ত্রী ডা: রহিমা খাতুন শেফালী জানান, ২০১৮ সাল থেকেই বাড়ির সীমানা প্রাচীরের জায়গাকে ঘিরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার সাথে প্রয়াত চিকিৎসক আব্দুল খালেক এর বিরোধ চলছিল। পৌর সভার দাবী ৪নং ওয়ার্ডের কালাইশ্রীপাড়াস্থ তাদের বাড়ির সীমানা প্রাচীরের একটি অংশ পৌরসভার জায়গায়। এ বিষয়ে তাদের পক্ষ থেকে পৌর কর্তৃপক্ষকে লিগ্যাল নোটিশ দিয়ে সীমানা প্রাচীর নিজস্ব ভূমিতে থাকার বিষয়টি অবহিত করা হয়। এর পরেও বারবার হুমকি দেয়া হয় প্রচীর ভাঙ্গার জন্য। ফলে পৌরসভার বিরুদ্ধে ২০১৮ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞার দাবীতে মামলা দায়ের করেন। এটি বদলি হয়ে সরাইল সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে দেওয়ানী পূনঃ নম্বরভূক্ত হয়। পরে উভয় পক্ষের স্বাক্ষী প্রমান শেষে কোর্ট থেকে মাপ ঝোপ শেষে প্রমানিত হয় উক্ত সীমানা প্রাচীর তার মালিকানাধীন জায়গায় অবস্থিত। বিজ্ঞ আদালত শুনানী শেষে ২৬ জানুয়ারী ২০২৩ সালে ডিক্রি জারি করে বসতবাড়ির বিরোধপূর্ণ দেয়ালটি অপসারন না করতে পৌরসভাকে বারিত করে। ডিক্রি প্রচারিত হবার পর কোন আপীল বা রিভিউ করেনি পৌরসভা। নেয়নি আইনী আইনী উদ্যোগ। পরবর্তীতে গত ৭ মে আমার সীমানা প্রচীরের সংস্কার কাজ করার সময় পৌরকর্তৃপক্ষ আদালতের আদেশ আমান্য করে আমার বাড়ির পশ্চিম পাশের প্রায় অর্ধশত বছরের পুরাতন দেয়ালটি ভেঙ্গে ফেলে পৌরসভা। পৌর কর্তৃপক্ষের এহেন আচরণে স্থানীয়রাসহ শহর জুড়ে ঘটনাটি ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
এ ব্যাপারে পৌর মেয়র নায়ার কবির, ৪নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মিজানুর রহমান সার্ভেয়ার মাকসুদুর রহমানের বিরুদ্ধে আদালতের আদেশ লঙ্ঘনের অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণ চেয়ে সরাইল সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী পরিবারটি। মামলা নং ০৪/ ২০২৩।
এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা মেয়র নায়ার কবির এ প্রতিবেদককে বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই তবে প্রধান নির্বহী কর্মকর্তা আব্দুল কুদ্দস বিষয়টি জানেন।
অভিযোগের বিষয়টি পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মর্কতা মো: আব্দুল কুদ্দস’কে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হয়নি।
বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো: মোর্শেদ আলম বলেন, পৌর কৃর্তৃপক্ষ আদালতের আদেশ লঙ্ঘনের অভিযোগে আমার মক্কেল ক্ষতিপূরণ সহ আইনগত পদক্ষেপ নেয়ার জন্য আদালতে দারস্থ হয়েছে। পৌর সভার মত জনহীতকর প্রতিষ্ঠানে এমন ভূমিকায় আমরা হতবাক।