পারভেজ আল কামাল: ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের মধ্যপাড়া বর্ডার বাজার সংলগ্নে মরহুম এড: আবু সাদেক মিয়ার গ্যাস সংযোগ অনলাইন করার নামে প্রতারণার অভিযোগ পাওয়া গেছে ঠিকাদার মোঃ আল আমীনের বিরুদ্ধে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ২০২০ এর শেষের দিকে মৃত এডভোকেট আবু সাদেক মিয়ার বাড়ির পূর্ণ নির্মাণ কাজ শুরু করে। এ সময় তাদের ব্যবহৃত গ্যাস সংযোগটি এলাকার পরিচিত ঠিকাদার আল আমিনের মাধ্যমে অস্থায়ী ভাবে বন্ধ করে বাড়ির কাজ শুরু করেন এবং ২০২২ এর সেপ্টেম্বর মাসে তাদের বাড়ির কাজ সম্পন্ন হয়। পুনরায় আল আমিনকে দিয়ে তাদের গ্যাস সংযোগটি পূর্ণস্থাপন করা হয় এবং ২০২২ এর ডিসেম্বর মাসে তারা তাদের গ্যাস বিল বই নিয়ে বিল হিসেব করে দেখেন কয়েক বছরের বিল বকেয়া জমে আছে। উক্ত বিল পরিশোধের জন্য মৃত এডভোকেট আবু সাদেক মিয়ার ছেলে মোঃ আবু মুছা (জুমন) বাখরাবাদ গ্যাস ডিষ্টিবিশন অফিসে যোগাযোগ করে এবং অফিস থেকে জানায় বিল বই অনলাইন করে পরিশোধ করার জন্য তখন আবু মুছা (জুমন) তার মাতার নামীয় গ্যাস বই যার নং-১৪০১২১৫ এর বিল ৫৫ হাজার ৩৬৫ টাকা অনলাইন করে পরিশোধের জন্য। আল আমিনকে অনলাইন করে দিতে বললে উনি জানাই অনলাইন করতে ৪/৫ হাজার টাকা খরচ লাগবে। তারপর বিগত ১৫ জানুয়ারি ২৩ ইং তারিখে আল আমিনকে আবু মুছা মোঃ জুমন তার বাসায় ডেকে নিয়ে তার বড় ভাই ও বাবার উপস্থিতিতে তাদের গ্যাস বিল ৫৬ হাজার ৩৬৫ টাকা এবং আল আমিন এর খরচ বাবদ সহ সর্বমোট ৬০ হাজার টাকা এবং বিল বই অনলাইনের জন্য তাহার ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বার প্রদান করে বলে যে বিল পরিশোধ করে তাদেরকে রিসিট দেওয়ার জন্য। একই এলাকার ও পূর্ব পরিচিত হওয়ায় ঠিকাদার আল আমিনকে তারা এই দায়িত্ব দেন। আল আমিন টাকা নেওয়ার ৫/৭ দিন হয়ে গেলেও এ বিষয়ে কোন যোগাযোগ করেনি। পড়ে আল আমিনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে সে বিভিন্ন ব্যক্তিগত সমস্যা দেখিয়ে দুই তিনদিনের ভিতর হয়ে যাবে বলেন। এক পর্যায়ে বিগত ১২ মার্চ ২০২৩ তারিখ আবু মুছা (জুমন) বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিশন ঘাটুরা অফিসে যোগাযোগ করলে জানতে পারে তাদের বিল বই অনলাইন হয়েগেছে এবং বিলও পরিশোধ হয়েছে। কিন্তু অনলাইনে তাহার ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারের পরিবর্তে অন্য নাম্বার দেখাচ্ছে। অফিস রেকর্ড অনুযায়ী ২৩ তারিখে তাদের বিল পরিশোধ হয়েছে। কিন্তু তাদের নামের জায়গায় নাম দেখাচ্ছে ওয়ায়েছ ক্বরনী। পরবর্তীতে আল আমিনের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলে দেখা করতে না পেরে মুঠোফোনেও ফোন দিলে রিসিভ না করে ফোন কেটে দেন। পরে ওয়ায়েছ ক্বরনীর সন্ধান করতে গিয়ে জানা যায় পৌর মুক্তমঞ্চের পূর্ব পার্শ্বে জে. কে কনফেকশনারী ষ্টোরের স্বত্বাধিকারী মোঃ ওয়ায়েছ ক্বরনী। তার সঙ্গে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি মেসার্স মনি এন্টারপ্রাইজ এর ঠিকাদার মোঃ সাদেক মিয়ার মেয়ের জামাই মোঃ আল আমিনের কাছ থেকে তিন লক্ষ টাকা চুক্তি করে সংযোগটি ক্রয় করে ব্যবহার করছি এবং অনলাইনে আমার নাম্বার আসছে এ মর্মে সে আমার কাছ থেকে এক লক্ষ দশ হাজার টাকার বিনিময়ে আমার বাসায় সংযোগ দেয় এবং কিছু দিনের মধ্যে পরিবর্তন করে পুরোপুরি সংযোগটি আমাকে হস্তান্তর করে বাকী টাকা নিবে বলে জানাই।
ভুক্তভোগী আবু মুছা (জুমন) জানান বাখরাবাদ গ্যাস অফিসে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তার বৈধ সংযোগের বৈধতা নিশ্চিত করতে এবং অনলাইনে তার নাম্বার পরিবর্তন করতে চেষ্টা করেন। বিগত ৬ এপ্রিল বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানী লিমিটেড ঘাটুরা অফিসের উপ-মহাব্যবস্থাপক (বিক্রয়) এর বরাবর নাম্বার পরিবর্তনের একটি আবেদন করেন। আবেদন যাচাই করে আমার নাম্বার দিয়ে অনলাইন করে দেন।
আরও জানা যায়, আল আমিন নামধারী ঠিকাদার। তার শ্বশুরের মেসার্স মনি এন্টারপ্রাইজ এর স্বত্বাধিকারী মোঃ সাদেক মিয়ার লাইসেন্স ব্যবহার করে শহরের বিভিন্ন জায়গায় অবৈধ সংযোগ দিয়ে প্রতারনা করে আসছে। তার বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীরা মামলার প্রস্তুতি চলছে।