আখাউড়া প্রতিনিধিঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় আব্দুল হেকিম ওরফে টাক্কা হত্যা মামলায় গ্রেফতারের আগেই প্রধান আসামী রাসেল মেম্বারসহ পাঁচ আসামী হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন পেয়ে এলাকায় বীরদর্পে ঘুরা-ফেরা করছেন। এতে আব্দুল হেকিম টাক্কার পরিবার ও এই মামলার সাক্ষীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জানিয়েছেন নিহত টাক্কার মা রুপশা বেগম। শুক্রবার বেলা ৩টায় তাদের বাড়িতে টাক্কার মা আরও বলেন, আসামিরা গ্রেফতারের আগেই জামিন পাওয়ায় তারা হতবাক। এখন তিনি এবং তার পরিবারের সদস্যরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। সাক্ষীরাও ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছেন। তাদের অনেকেই এখন সাক্ষ্য দিতে আগ্রহ হারাচ্ছেন।
ঘটনার সূত্রপাত সম্পর্কে অনুসন্ধানে জানা যায় গত ১৭ মার্চ শুক্রবার বিকেলে আখাউড়া উপজেলার উত্তর ইউনিয়নের কল্যাণপুর গ্রামের আব্দুল হেকিম ওরফে টাক্কা (৩২) কে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। রাতে ঢাকা নেওয়া পথে তার মৃত্যু হয়। নিহত আব্দুল হেকিম টাক্কা ওই গ্রামের বাবুল মিয়ার ছেলে। এ ঘটনায় দুপক্ষের নারী-পুরুষসহ অন্তত আটজন আহত হন। এ ঘটনায় আব্দুল হেকিম টাক্কার মা রুপশা বেগম ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি মেম্বার রাসেল মেম্বারসহ ১৪জনকে আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা ও নিহতে মা রুপশা বেগমের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের আখাউড়া উত্তর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী আনোয়ারপুর- কল্যাণপুর ৯ নং ওয়ার্ড থেকে রাসেল আহমেদ সদস্য নির্বাচিত হয়। এরপর থেকে রাসেল নিজেকে এই এলাকার সম্রাট হিসেবে ঘোষণা করেন। সীমান্ত সংলগ্ন হওয়ায় এই এলাকার কিছু মানুষ মাদক কারবারের সাথে জড়িত। স্থানীয় মেম্বার হিসেবে প্রভাব খাঁটিয়ে রাসেল মাদক সাম্রাজ্য একক নিয়ন্ত্রণ করতে চাইত। আর এতে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় আব্দুল হেকিম টাক্কা। নিহত টাক্কা মেম্বারকে মাসোহারা দিতে অস্বীকার করে। এর পর থেকে রাসেল মেম্বার টাক্কাকে বিভিন্ন সময় হুমকি ধমকিসহ নানাভাবে হয়রানি করে আসছিল। এর ধারাবাহিকতায় গত তিন মাস আগে এক রাতে টাক্কাকে কল্যাণপুর গ্রামের এক প্রবাসীর স্ত্রীর ঘরে আটক করে। পরকীয়ার অভিযোগে ওই নারীসহ তাকে থানায় সোপর্দ করেন রাসেল মেম্বার।ওই ঘটনায় জেল হাজত থেকে ছাড়া পেয়ে টাক্কা বাড়িতে আসলে রাসেল মেম্বারসহ তার লোকজন বিভিন্ন সময় টাক্কাকে পরকীয়া সংক্রান্ত বিষয়ে অপমান অপদস্ত করে কথা বলতেন। আর রাসেল মেম্বারের সমস্ত অনৈতিক কর্মকান্ডে সহযোগী হলেন একই গ্রামের বাসিন্দা রনি। ঘটনার কিছু সময় আগে এই রনি নিহত টাক্কাকে ফোন করে বিভিন্ন উস্কানিমূলক কথাবার্তা বলে তাকে সাহস থাকলে গ্রামে আসার কথা বলে ডেকে এনে পরিকল্পনা মাফিক এই হত্যা কান্ড ঘটায়। বর্তমানে রাসেল মেম্বারসহ পাঁচ আসামী তাদেরকে বিভিন্ন ভাবে ভয়বিতি হুমকি ধমকি দিয়ে যাচ্ছে। এতে করে তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলেও জানান।
এ ব্যপারে আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আসাদুল ইসলাম বলেন, এমন কোন অভিযোগ আমার কাছে আসে নাই। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।