Brahmanbaria ০৭:০২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Last News :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া ডায়াবেটিক সমিতির উদ্যোগে যথাযোগ্য মর্যাদায় প্রফেসর ডাঃ ইব্রাহিম এর ৩৫ তম মৃত্যু বার্ষিকী পালিত বিজয়নগরে হিন্দু থেকে সেচ্ছায় মুসলমান হলেন এক যুবক পৃথক ২টি অভিযানে হত্যা ও নাশকতা মামলার ২ জন পলাতক আসামীকে গ্রেফতার  ভুয়া র‌্যাব পরিচয়ে চাঁদাবাজি করার সময় গ্রেফতার ২ সারাদেশের শিক্ষকগণকে বল প্রয়োগ করে পদত্যাগ করানোর প্রতিবাদে নবীনগরে মানববন্ধন সরাইলে সাবেক গৃহায়ণ গণপূর্তমন্ত্রী ও ৩ এমপিসহ ৬৭ জনের নামে হত্যা মামলা আখাউড়ায় আনিসুল হক ও তাকজিল খলিফার বিচার দাবীতে মানববন্ধন ট্রাক্টরের সাথে প্রাইভেটকারের ধাক্কায় মা ও মেয়ে নিহত উবায়দুল মোকতাদিরসহ সকল হত্যাকারীদেরকে গ্রেফতারে দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিক্ষোভ সাবেক গণপূর্তমন্ত্রী মোকতাদিরের বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় খুন ও গুমের মামলা

নবীনগরে দুই কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা ডাচ বাংলা ব্যাংকের ম্যানেজার 

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৪:১৫:১৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ মার্চ ২০২৩
  • ৯৮৭ Time View
মমিনুল হক রুবেল, নবীনগর প্রতিনিধি: চেক জালিয়াতি, মিথ্যা প্ররোচনায় গ্রাহক ও এলাকাবাসীর কোটি টাকা আত্মসাত করে লাপাত্তা হয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার জিনদপুর বাজারের ডাচ বাংলা এজেন্ট ব্যাংকের ম্যানেজার মামুন সোরোয়ার। সে হুরুয়া গ্রামের চাঁন মিয়া ছেলে। তার বিরুদ্ধে গ্রাহক ও এলাকাবাসী প্রায় দুই কোটি টাকা আত্মসাতের চাঞ্চল্যকর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা যায়, মামুন সোরোয়ার দীর্ঘদিন যাবদ জিনদপুর বাজারের ডাচ বাংলা এজেন্ট ব্যাংকের ম্যানেজার পদে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। এতে করে ব্যাংকের গ্রাহক ও স্থানীয়দের সাথে তার বেশ সখ্যতা গড়ে উঠে। এই সুযোগে মামুন ব্যাংকে আগত গ্রাহকদের এফডিয়ারের টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে, কৌশলে গ্রাহকদের ভূয়া রিসিট প্রদানের মাধ্যমে নিজের কাছে রেখে দেন এবং স্থানীয় কিছু সাধারন মানুষকে অধিক মুনাফা প্রদান ও বিভিন্ন ব্যবসার কথা বলেও প্রায় কোটি টাকা আত্মসাত করেন। পুলিশ তাকে আটক করার পরও রহস্যজনক কারণে ছেড়ে
দিয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে এবং পুলিশের থেকে ছাড়া পেয়ে বিষয়টি প্রকাশ হয়ে যাওয়াই ইতিমধ্যে এলাকা থেকে পালিয়ে গেছেন মামুন। এদিকে এঘটনার জানা জানি হলে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন ভোক্তভোগীদের দেখে মিলছে।
ভুক্তভোগী ছাত্রলীগ নেতা ইমরান আহমেদ বলেন, আমার সঙ্গে ব্যবসায়িক লেনদেন করা এবং বিভিন্ন ব্যবসার কথা বলে মামুন প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা নিয়েছেন। থানা থেকে জিম্মায় এসেই তিনি পালিয়ে গেছেন, আমি এ টাকা না পেলে আমি সর্বহারা হয়ে যাবো, কি করবো বুঝতেছিনা। আরেক ভুক্তভোগী জিনদপুর বাজারের ব্যবসায়ী মোঃ লিটন জানান, আমার তিন লাখ টাকার ব্যাংকে এফডিয়ার করেছিলাম, এখন ব্যাংকে এ্যাকাউন্ড চেক করে দেখি, আমার একাউন্টে কোন টাকাই নাই। আমি এর সুষ্ঠু সমাধান চাই। আরেক ভুক্তভোগীর ভাই মোঃ রুবেল জানান, তার বোনের নামে ব্যাংকে ৫ লাখ ৩০ হাজার টাকা ছিলো। মামুন ৫ লাখ টাকা এফডিয়ার করে দিবে আমার বোনকে বলছিলো। এখন এ্যাকাউন্ড চেক করে দেখি ৫ লক্ষ উদাও, একাউন্ডে মাত্র ৩০ হাজার টাকা আছে আর আমার বোনের নামে কোন এফডিয়ারও করেননি। এছাড়াও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরো একাদিক ভুক্তভোগী মামুনের এ প্রতারনার স্বীকার হয়েছেন বলে জানা গেছে। ভুক্তভোগীরা মামুনের লাপাত্তা হয়ে যাওয়ার খবরে দিশেহারা হয়ে পড়েছে।
জিনদপুর বাজারের ডাচ্-বাংলা এজেন্ট ব্যাংকের স্বত্বাধিকারী সৈয়দ ফয়েজ আহমেদ জানান, মামুনের চেক জালিয়াতির বিষয়টি টের পেয়ে আমি মামুনের বিরুদ্ধে নবীনগর থানায় মৌখিক অভিযোগ করি। ওই দিনই পুলিশ নিজ গ্রাম থেকে মামুনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। প্রায় ১২ ঘণ্টা পর কিছু লোকজনের জিম্মায় রাত ১০টার দিকে পুলিশ তাকে ছেড়ে দেয়। জিম্মায় থাকা ব্যাক্তিরা ৭ দিনের মধ্যে বিষয়টি সমাধান করে দেওয়ার আশ্বাস প্রদান করেছিলো। তারা কি সমাধান করে সেটা দেখার অপেক্ষায় আছি এবং গ্রাহকদের কথা মাথায় রেখে আমি ব্যাংকের কার্যক্রম চালু রেখেছি।
এবিষয়ে জিনদপুর বাজার পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোঃ সুহেল আহাম্মেদ জানান, এব্যাপরে কেউ বাজার কমিটির কাছে কোন অভিযোগ করেন নি, তবে তিনি বিষয়টি শুনেছেন। তিনিও এর সমাধান চান।
এবিষয়ে নবীনগর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইফুদ্দিন আনোয়ার বলেন, মামুনকে আটক করেছিলো। ভাইস চেয়ারম্যান সহ তার পরিবার ৭ দিনের মধ্যে বিষয়টি সমাধান করে দিবে বলে তাদের জিম্মায় মামুনকে নিয়ে যায়। এখন যেহেতু সে পালিয়ে গেছে, ব্যাংকের স্বত্বাধিকারী যদি আমাদের কাছে অভিযোগ করেন, তাহলে আমরা তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিবো।
এব্যাপারে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান জাকির হোসেন সাদেক বলেন, মামুনকে ব্যাংকের সঠিক অডিটের জন্য তার পরিবারের জিম্মায় ৭ দিন সময় দেওয়া হয়েছিলো। যেহেতু সে লাপাত্তা হয়ে গেছে, এখন আর এটা সমাধানের উপায় নেই।
এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ একরামুল সিদ্দিকবলেন, বিষয়টি আমি ফেইসবুকে দেখেছি। ঐ ব্যাংকের উর্ধতনকর্মকর্তার সাথে আমি এবিষয়ে কথা বলে ব্যবস্থা নিবো।
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Md Al Mamun

জনপ্রিয় খবর

ব্রাহ্মণবাড়িয়া ডায়াবেটিক সমিতির উদ্যোগে যথাযোগ্য মর্যাদায় প্রফেসর ডাঃ ইব্রাহিম এর ৩৫ তম মৃত্যু বার্ষিকী পালিত

নবীনগরে দুই কোটি টাকা নিয়ে লাপাত্তা ডাচ বাংলা ব্যাংকের ম্যানেজার 

Update Time : ০৪:১৫:১৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ মার্চ ২০২৩
মমিনুল হক রুবেল, নবীনগর প্রতিনিধি: চেক জালিয়াতি, মিথ্যা প্ররোচনায় গ্রাহক ও এলাকাবাসীর কোটি টাকা আত্মসাত করে লাপাত্তা হয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার জিনদপুর বাজারের ডাচ বাংলা এজেন্ট ব্যাংকের ম্যানেজার মামুন সোরোয়ার। সে হুরুয়া গ্রামের চাঁন মিয়া ছেলে। তার বিরুদ্ধে গ্রাহক ও এলাকাবাসী প্রায় দুই কোটি টাকা আত্মসাতের চাঞ্চল্যকর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা যায়, মামুন সোরোয়ার দীর্ঘদিন যাবদ জিনদপুর বাজারের ডাচ বাংলা এজেন্ট ব্যাংকের ম্যানেজার পদে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। এতে করে ব্যাংকের গ্রাহক ও স্থানীয়দের সাথে তার বেশ সখ্যতা গড়ে উঠে। এই সুযোগে মামুন ব্যাংকে আগত গ্রাহকদের এফডিয়ারের টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে, কৌশলে গ্রাহকদের ভূয়া রিসিট প্রদানের মাধ্যমে নিজের কাছে রেখে দেন এবং স্থানীয় কিছু সাধারন মানুষকে অধিক মুনাফা প্রদান ও বিভিন্ন ব্যবসার কথা বলেও প্রায় কোটি টাকা আত্মসাত করেন। পুলিশ তাকে আটক করার পরও রহস্যজনক কারণে ছেড়ে
দিয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে এবং পুলিশের থেকে ছাড়া পেয়ে বিষয়টি প্রকাশ হয়ে যাওয়াই ইতিমধ্যে এলাকা থেকে পালিয়ে গেছেন মামুন। এদিকে এঘটনার জানা জানি হলে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন ভোক্তভোগীদের দেখে মিলছে।
ভুক্তভোগী ছাত্রলীগ নেতা ইমরান আহমেদ বলেন, আমার সঙ্গে ব্যবসায়িক লেনদেন করা এবং বিভিন্ন ব্যবসার কথা বলে মামুন প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা নিয়েছেন। থানা থেকে জিম্মায় এসেই তিনি পালিয়ে গেছেন, আমি এ টাকা না পেলে আমি সর্বহারা হয়ে যাবো, কি করবো বুঝতেছিনা। আরেক ভুক্তভোগী জিনদপুর বাজারের ব্যবসায়ী মোঃ লিটন জানান, আমার তিন লাখ টাকার ব্যাংকে এফডিয়ার করেছিলাম, এখন ব্যাংকে এ্যাকাউন্ড চেক করে দেখি, আমার একাউন্টে কোন টাকাই নাই। আমি এর সুষ্ঠু সমাধান চাই। আরেক ভুক্তভোগীর ভাই মোঃ রুবেল জানান, তার বোনের নামে ব্যাংকে ৫ লাখ ৩০ হাজার টাকা ছিলো। মামুন ৫ লাখ টাকা এফডিয়ার করে দিবে আমার বোনকে বলছিলো। এখন এ্যাকাউন্ড চেক করে দেখি ৫ লক্ষ উদাও, একাউন্ডে মাত্র ৩০ হাজার টাকা আছে আর আমার বোনের নামে কোন এফডিয়ারও করেননি। এছাড়াও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরো একাদিক ভুক্তভোগী মামুনের এ প্রতারনার স্বীকার হয়েছেন বলে জানা গেছে। ভুক্তভোগীরা মামুনের লাপাত্তা হয়ে যাওয়ার খবরে দিশেহারা হয়ে পড়েছে।
জিনদপুর বাজারের ডাচ্-বাংলা এজেন্ট ব্যাংকের স্বত্বাধিকারী সৈয়দ ফয়েজ আহমেদ জানান, মামুনের চেক জালিয়াতির বিষয়টি টের পেয়ে আমি মামুনের বিরুদ্ধে নবীনগর থানায় মৌখিক অভিযোগ করি। ওই দিনই পুলিশ নিজ গ্রাম থেকে মামুনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। প্রায় ১২ ঘণ্টা পর কিছু লোকজনের জিম্মায় রাত ১০টার দিকে পুলিশ তাকে ছেড়ে দেয়। জিম্মায় থাকা ব্যাক্তিরা ৭ দিনের মধ্যে বিষয়টি সমাধান করে দেওয়ার আশ্বাস প্রদান করেছিলো। তারা কি সমাধান করে সেটা দেখার অপেক্ষায় আছি এবং গ্রাহকদের কথা মাথায় রেখে আমি ব্যাংকের কার্যক্রম চালু রেখেছি।
এবিষয়ে জিনদপুর বাজার পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোঃ সুহেল আহাম্মেদ জানান, এব্যাপরে কেউ বাজার কমিটির কাছে কোন অভিযোগ করেন নি, তবে তিনি বিষয়টি শুনেছেন। তিনিও এর সমাধান চান।
এবিষয়ে নবীনগর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইফুদ্দিন আনোয়ার বলেন, মামুনকে আটক করেছিলো। ভাইস চেয়ারম্যান সহ তার পরিবার ৭ দিনের মধ্যে বিষয়টি সমাধান করে দিবে বলে তাদের জিম্মায় মামুনকে নিয়ে যায়। এখন যেহেতু সে পালিয়ে গেছে, ব্যাংকের স্বত্বাধিকারী যদি আমাদের কাছে অভিযোগ করেন, তাহলে আমরা তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিবো।
এব্যাপারে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান জাকির হোসেন সাদেক বলেন, মামুনকে ব্যাংকের সঠিক অডিটের জন্য তার পরিবারের জিম্মায় ৭ দিন সময় দেওয়া হয়েছিলো। যেহেতু সে লাপাত্তা হয়ে গেছে, এখন আর এটা সমাধানের উপায় নেই।
এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ একরামুল সিদ্দিকবলেন, বিষয়টি আমি ফেইসবুকে দেখেছি। ঐ ব্যাংকের উর্ধতনকর্মকর্তার সাথে আমি এবিষয়ে কথা বলে ব্যবস্থা নিবো।