Brahmanbaria ১২:৪৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ৩০ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Last News :
ঢাকাস্থ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সমিতির পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন সভাপতি এম এ খালেক ও সম্পাদক শ্যামল  বিজয়নগরে পরকিয়ার নামে মিথ্যা প্রচারের দাবি ভুক্তভোগীর! ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ডেলটা লাইফ ইনসিওরেন্স কোম্পানীর স্বামীর মৃত্যুর দাবীর চেক প্রধান ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সেতু এন্টারপ্রাইজ প্রাইজমানি ফুটবল টুর্নামেন্ট ফাইনালে কসবা বিজয়ী ভারতে যাওয়ার সময় মা-ছেলে আটক ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সপ্তাহে আলোচনা  ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অজ্ঞাত নারীর লাশ উদ্ধার পূজা মন্ডবের পরিচালনা পরিষদের সাথে মতবিনিময় – ইন্জিনিয়ার খালেদ হোসেন মাহবুব শ্যামল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিশ্ব শিক্ষক দিবস পালিত  ফরেন রেমিটেন্সে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সফলতা

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু, স্বজনদের বিক্ষোভ ও মানববন্ধন, আটক ৩

  • Reporter Name
  • Update Time : ১০:৪২:২৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ মার্চ ২০২৩
  • ১১২৭ Time View
নিজস্ব প্রতিবেদক:ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বেসরকারি হাসপাতালে নাকের পলিপাসের অপারেশন করতে গিয়ে ভুল চিকিৎসায় ইসতিয়াক আহমেদ ইকরাম (২২) নামের এক কলেজ ছাত্রের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (১৮ মার্চ) সকালে জেলা শহরের পুরাতন জেল রোড এলাকার আল খলিল হসপিটাল অ্যান্ড ডায়গনস্টিক সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে। সে সদর উপজেলার বুধল ইউনিয়নের চান্দিয়ারা গ্রামের মৃত শহিদুল ইসলামের ছেলে ও পৌর ডিগ্রী কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে সহপাঠিরা হাসপাতালে বিক্ষুব্ধ হয়ে হাসপাতালে ভাংচুর চালায়। 
দুপুর ১টার দিকে সহপাঠিরা বিক্ষোভ মিছিল বের করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করে। এসময় বক্তব্য রাখেন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাসুম বিল্লাহ, জেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি ওবায়দুল হক বাবু, ইশতিয়াকের বন্ধু মাহমুদুল হাসান ও মুস্তাকিম খান প্রমুখ। বক্তরার দাবি করেন, ভূল চিকিসায় ইশতিয়াক অপারেশনের পর পরই মারা গেছে। তারপর তার লাশ আইসিইউতে পাঠানো হয়েছে। শুধু অতিরিক্ত বিল করার জন্য তার লাশ আইসিইউতে পাঠায়। খবর পেয়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
মৃতের স্বজনরা জানিয়েছেন, শুক্রবার সকালে ইশতিয়াককে নাকের পলিপাস অপারেশনের জন্য আল খলিল হসপিটাল অ্যান্ড ডায়ডাগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি করা হয়। এরপর বিকেল তিনটার সময় হাসপাতালের সার্জন ডাক্তার মোঃ রাফিউল আলম ও এনেস্থিসিয়া চিকিৎসক ফৌজিয়া মমতাজ সুপ্তীর তত্বাবধানে তার নাকের পলিপাস অপারেশন করা হয়। এরপর তাকে আশঙ্কাজনক ও অচেতন অবস্থায় তাকে বেডে দেওয়া হয়। এ সময় রোগীর করুণ অবস্থা দেখে পরিবারের লোকজন আত্মচিৎকার শুরু করে। রোগীর জ্ঞান না ফিরায় হাসপাতালের লোকজন পরিবারের কাউকে না জানিয়ে ইকরামকে শহরের আইসিইউ স্পেশালাইজড হাসপাতালে স্থানান্তরিত করে পালিয়ে যায়। সেখানে শনিবার সকালে অচেতন অবস্থায় সে মারা যায়। এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই বাচ্চু মিয়া সদর মডেল থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছে।
ইশতিয়াকের চাচা শিক্ষানবিশ এডভোকেট শামছুল ইসলাম জানান, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে তার অপারেশন করেছেন ডা. রাফিউল আলম। কিন্তু রাফিউল জানিয়েছেন তিনি অপাশেন করেননি। ইশতিয়াকের সঠিক চিকিৎসা হয়নি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলা এবং ভুল চিকিৎসায় তার মৃত্যু হয়েছে।
আল খলিল হসপিটাল অ্যান্ড ডায়ডাগনস্টিক সেন্টারের মালিক মোঃ মানিক বলেন, হাসপাতালে কোন ভুল চিকিৎসা হয়নি। অপারেশন করেছেন ডা. রাফিউল আলম। কিন্তু রাফিউল জানিয়েছেন তিনি অপারেশন করেননি এমন প্রশ্নে তিনি জানান, হাসপাতালের সিসি ক্যামেরা আছেন সব ভিডিও আছেন বলে তিনি কল কেটে দেন। এদিকে ঘটনার পর থেকেই হাসপাতাল তালা ঝুলিয়ে গাঁ ঢাকা দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ এমরানুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করেছি। ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ পেয়েছি। এতে আল-খলিল হসপিটাল এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের চেয়ারম্যান খলিলুর বশির মানিক, হাসপাতালের সার্জন ডাক্তার মোঃ রাফিউল আলম ও এনেস্থিসিয়া চিকিৎসক ফৌজিয়া মমতাজ সুপ্তীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে এঘটনায় হাসপাতালের মালিকের ভাই এমদাদুল বশির জয়, হাসপাতালের স্টাফ নাজমুল হক ও আরিফুল ইসলাম নামের তিনজনকে আটক করা হয়েছে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জেলা সিভিল সার্জন ডাক্তার মোহাম্মদ একরাম উল্লাহ্ বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে সরেজিমন তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Md Al Mamun

জনপ্রিয় খবর

ঢাকাস্থ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সমিতির পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন সভাপতি এম এ খালেক ও সম্পাদক শ্যামল 

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু, স্বজনদের বিক্ষোভ ও মানববন্ধন, আটক ৩

Update Time : ১০:৪২:২৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ মার্চ ২০২৩
নিজস্ব প্রতিবেদক:ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বেসরকারি হাসপাতালে নাকের পলিপাসের অপারেশন করতে গিয়ে ভুল চিকিৎসায় ইসতিয়াক আহমেদ ইকরাম (২২) নামের এক কলেজ ছাত্রের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (১৮ মার্চ) সকালে জেলা শহরের পুরাতন জেল রোড এলাকার আল খলিল হসপিটাল অ্যান্ড ডায়গনস্টিক সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে। সে সদর উপজেলার বুধল ইউনিয়নের চান্দিয়ারা গ্রামের মৃত শহিদুল ইসলামের ছেলে ও পৌর ডিগ্রী কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে সহপাঠিরা হাসপাতালে বিক্ষুব্ধ হয়ে হাসপাতালে ভাংচুর চালায়। 
দুপুর ১টার দিকে সহপাঠিরা বিক্ষোভ মিছিল বের করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করে। এসময় বক্তব্য রাখেন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাসুম বিল্লাহ, জেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি ওবায়দুল হক বাবু, ইশতিয়াকের বন্ধু মাহমুদুল হাসান ও মুস্তাকিম খান প্রমুখ। বক্তরার দাবি করেন, ভূল চিকিসায় ইশতিয়াক অপারেশনের পর পরই মারা গেছে। তারপর তার লাশ আইসিইউতে পাঠানো হয়েছে। শুধু অতিরিক্ত বিল করার জন্য তার লাশ আইসিইউতে পাঠায়। খবর পেয়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
মৃতের স্বজনরা জানিয়েছেন, শুক্রবার সকালে ইশতিয়াককে নাকের পলিপাস অপারেশনের জন্য আল খলিল হসপিটাল অ্যান্ড ডায়ডাগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি করা হয়। এরপর বিকেল তিনটার সময় হাসপাতালের সার্জন ডাক্তার মোঃ রাফিউল আলম ও এনেস্থিসিয়া চিকিৎসক ফৌজিয়া মমতাজ সুপ্তীর তত্বাবধানে তার নাকের পলিপাস অপারেশন করা হয়। এরপর তাকে আশঙ্কাজনক ও অচেতন অবস্থায় তাকে বেডে দেওয়া হয়। এ সময় রোগীর করুণ অবস্থা দেখে পরিবারের লোকজন আত্মচিৎকার শুরু করে। রোগীর জ্ঞান না ফিরায় হাসপাতালের লোকজন পরিবারের কাউকে না জানিয়ে ইকরামকে শহরের আইসিইউ স্পেশালাইজড হাসপাতালে স্থানান্তরিত করে পালিয়ে যায়। সেখানে শনিবার সকালে অচেতন অবস্থায় সে মারা যায়। এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই বাচ্চু মিয়া সদর মডেল থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছে।
ইশতিয়াকের চাচা শিক্ষানবিশ এডভোকেট শামছুল ইসলাম জানান, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে তার অপারেশন করেছেন ডা. রাফিউল আলম। কিন্তু রাফিউল জানিয়েছেন তিনি অপাশেন করেননি। ইশতিয়াকের সঠিক চিকিৎসা হয়নি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলা এবং ভুল চিকিৎসায় তার মৃত্যু হয়েছে।
আল খলিল হসপিটাল অ্যান্ড ডায়ডাগনস্টিক সেন্টারের মালিক মোঃ মানিক বলেন, হাসপাতালে কোন ভুল চিকিৎসা হয়নি। অপারেশন করেছেন ডা. রাফিউল আলম। কিন্তু রাফিউল জানিয়েছেন তিনি অপারেশন করেননি এমন প্রশ্নে তিনি জানান, হাসপাতালের সিসি ক্যামেরা আছেন সব ভিডিও আছেন বলে তিনি কল কেটে দেন। এদিকে ঘটনার পর থেকেই হাসপাতাল তালা ঝুলিয়ে গাঁ ঢাকা দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ এমরানুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করেছি। ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ পেয়েছি। এতে আল-খলিল হসপিটাল এন্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের চেয়ারম্যান খলিলুর বশির মানিক, হাসপাতালের সার্জন ডাক্তার মোঃ রাফিউল আলম ও এনেস্থিসিয়া চিকিৎসক ফৌজিয়া মমতাজ সুপ্তীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে এঘটনায় হাসপাতালের মালিকের ভাই এমদাদুল বশির জয়, হাসপাতালের স্টাফ নাজমুল হক ও আরিফুল ইসলাম নামের তিনজনকে আটক করা হয়েছে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জেলা সিভিল সার্জন ডাক্তার মোহাম্মদ একরাম উল্লাহ্ বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে সরেজিমন তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।