মমিনুল হক রুবেল: কোটি টাকা আত্মসাৎ করে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে শান্ত কুমার রায় নামের এক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে। এই অবস্থায় আজ শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারী) বিকাল ৫টার দিকে আত্মগোপনে থাকা ছাত্রলীগ নেতা শান্ত কুমার রায় তার ফেসবুক আইডি থেকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। সেই স্ট্যাটাসে তিনি দাবি করেন, একজন তার কাছে দুই কোটি টাকা দাবি করলে তিনি ৪০ লাখ দিয়েছিলেন। তারপরও তার হুমকি-ধমকিতে পালিয়ে গেছেন বলে জানান।
শান্ত কুমার রায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার বড়িকান্দি ইউনিয়নের থোল্লাকান্দি গ্রামের নির্মল রায়ের ছেলে। তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক উপ-সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক। রয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদেও। ছাত্রলীগের রাজনীতির পাশাপাশি সক্রিয় সদস্য ছিলেন ইসকনের (ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনশাসনেস)। গত ১৮ ফেব্রুয়ারী থেকে তিনি পলাতক রয়েছেন। শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারী) পর্যন্ত টাকা পাওয়ার অভিযোগ তুলে তার বিরুদ্ধে ১২জন লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
তার স্ট্যাটাসে লিখেন-‘প্রিয় দেশবাসী আজ আমি সবার কাছে খারাপ কিন্ত বিবেচনা করুন আমি কেনো এমন হলাম! যে আমি বিনামূল্যে একটি চকলেটও কারু কাছ থেকে খায়নি কেনো এত বড় অপরাধী হইলাম, যাকে কোটি কোটি টাকা দিলাম, জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় নষ্ট করলাম তার জন্য আজ আমার এই অবস্থা, যার কথা বলছি, সে কিছুদিন আগে আমার কাছ থেকে দুই কোটি টাকা চাইলো। আমি ৪০ লাখ টাকা দিলাম পরে বললাম ভাই আমি আর পারছি না, সে বললো তোমার বাবার কাছে বলো আমি বললাম আমার বাবার সাথে আমার সম্পর্ক ভাল না। তাছাড়া আমার বাবার ব্যবসা এখন নষ্ট হয়ে গেছে আমার সাথে যোগাযোগ নেই। তারপর সে বলে আমি কিছু বুঝি না টাকা আমার লাগবে, পরে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ, আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দিতে থাকে সে তার সহযোগীরা। মেরে ফেলবে টাকা না দিলে তার সহযোগীরা খবর পাঠায়।এই ভয়ে আমি আমার বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়। আমার কাছে অডিও, ভিডিও-রেকর্ড সব কিছু আছে। কিন্তু আমার পরিবারের সদস্যদের জীবন বাঁচানোর জন্য তার নাম প্রমাণ গুলো প্রকাশ করতে পারছি না। বাড়ি থেকে যখন বের হই আমার কাছে সাত হাজার টাকা ছিলো এখন আমার বিরুদ্ধে কোটি টাকার অভিযোগ!
আর হে যেতেতু আমি ব্যবসা করেছি তাই আমার দেনা পাওনা আছে, কিন্তু আজ সে তিলকে তাল করে আমার ও আমার বাবার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও খবর প্রকাশ করছে।
যারা আমার কাছ থেকে সত্যিকারের টাকা পাওনা তারা একদিন তা ফেরত পাবেন। আর যারা মিথ্যা বানোয়াট অভিযোগ করেছেন তাদের বিচার আইন দেখবে। যতদিন বেঁচে আছি, আমি আমার দেশকে ভালবাসি আমি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ভালবাসি।
আমি দেশরত্ন শেখ হাসিনাকে আমাদের অস্তিত্ব হিসেবে মেনে যাবো। আমি আমার দেশের আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল বাংলাদেশের আইন আমার সব কিছু বিবেচনা করে আমাকে যে বিচার প্রদান করবে তা আমি মাথা পেতে নেবো,মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট আমি আমার পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তার আকুল আবেদন করি।
পরম করুণাময় সৃষ্টি কর্তা দয়া করলে আবারও সবার মাঝ খানে দাড়িয়ে প্রানভরে বলবো জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু। ধন্য হোক বঙ্গবন্ধুর স্বপনের সোনার বাংলা।
তবে তিনি তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে তার কাছে দুই কোটি টাকা কেন বা কে দাবি করেছিলেন, তা বিস্তারিত প্রকাশ করেননি। কোথায় অবস্থান করছেন, তাও জানাননি।
এই বিষয়ে নবীনগর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুদ্দিন আনোয়ার জানান, শান্ত রায়ের ফেসবুক স্ট্যাটাস ইতিমধ্যে আমাদের নজরে এসেছে। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। তার বিষয়ে তদন্ত অব্যাহত আছে।