Brahmanbaria ০৭:৫৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Last News :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিপুল পরিমান ভারতীয় মোবাইল আটক! ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আন্তর্জাতিক গ্রামীন নারী দিবস পালিত আখাউড়ায় ভারতীয় নাগরিকসহ ২ জন আটক! ঢাকাস্থ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সমিতির পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন সভাপতি এম এ খালেক ও সম্পাদক শ্যামল  বিজয়নগরে পরকিয়ার নামে মিথ্যা প্রচারের দাবি ভুক্তভোগীর! ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ডেলটা লাইফ ইনসিওরেন্স কোম্পানীর স্বামীর মৃত্যুর দাবীর চেক প্রধান ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সেতু এন্টারপ্রাইজ প্রাইজমানি ফুটবল টুর্নামেন্ট ফাইনালে কসবা বিজয়ী ভারতে যাওয়ার সময় মা-ছেলে আটক ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সপ্তাহে আলোচনা  ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অজ্ঞাত নারীর লাশ উদ্ধার

কোটি টাকা নিয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা পলাতক

  • Reporter Name
  • Update Time : ০১:৫১:৫৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • ১১৭৩ Time View
স্টাফ রিপোর্টারঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়া নবীনগরে অধিক মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে শান্ত রায় নামের এক ছাত্রলীগ নেতা কয়েক কোটি টাকা নিয়ে ভারত পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগীরা উপজেলার বড়িকান্দি ইউনিয়নের থোল্লাকান্দি গ্রামের শান্ত রায় ও তার বাবা নির্মল রায়ের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার রাতে নবীনগর থানায় কয়েকটি লিখিত অভিযোগ দেন।অভিযুক্ত শান্ত রায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক উপ-সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক।
জানা যায়, শান্ত রাজনীতির পাশাপাশি সিগারেট ও স্বর্ণের ব্যবসা করতেন। এলাকায় প্রচলিত আছে, চট্টগ্রামে তার পিতার কয়েকটি স্বর্ণের দোকান আছে। এরই ভিত্তিতে তিনি এলাকায় বিশ্বস্ত হয়ে ওঠেন । পরে ব্যাংক রেটের চেয়ে উচ্চ লাভের প্রলোভন দেখিয়ে সিগারেট ও স্বর্ণের ব্যবসায় বিনিয়োগের প্রতি মানুষকে উৎসাহিত করেন। এতে মানুষ ব্যাংকে টাকা না রেখে তুলে দিতো শান্তর হাতে। কয়েক বছর ঠিকঠাকভাবেই লেনদেন করছিলেন শান্ত। কিন্তু গত শনিবার থেকে তিনি এলাকায় নেই। অথচ শনিবার ও রোববার অনেককে টাকা ফেরত দেয়ার কথা ছিল। তাই শুরু হয় কানাঘুষা। তখন বেরিয়ে আসে একের পর এক টাকা নেয়ার তথ্য।
শান্ত রায় যাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন ,বাড়াইল গ্রামের হক সাব ৪০ লাখ,সুজন মিয়া ২০ লাখ,আব্বাস উদ্দিন ২০ লাখ ৬০ হাজার, সগির মিয়া ১২ লাখ, শ্যামল চন্দ্র দাস আট লাখ ৬০ হাজার, অক্লান্ত চন্দ্র দেব নাথ ৩ লাখ, নিলখী গ্রামের খোরশেদ আলম পাঁচ লাখ, থোল্লাকান্দি গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম ৩৯ লাখ, থোল্লাকান্দি গ্রামের আতিকুর রহমান রনি ৩ লাখ, বড়িকান্দি ইউনিয়নের মুক্তারামপুর গ্রামের শাহ জালাল ৫৩ লাখ, ধরাভাঙ্গা গ্রামের বাবলু মিয়া ১১ লাখ, বাড়াইল গ্রামের মাহফুজুর রহমান ৩ লাখ, নরসিংদীর বাদল মিয়া ৫ লাখ টাকা।
এছাড়া সলিমগঞ্জ ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক পদ পাইয়ে দেয়ার কথা বলে রিফাত আহম্মেদ থেকে ছয় লাখ।বড়িকান্দি ইউনিয়নের ছাত্রলীগের সভাপতি প্রার্থী জাহিদুল ইসলাম থেকে এক লাখ হাতিয়ে নিয়েছেন শান্ত।
ভুক্তভোগী হক সাহেব জানান, ‘শান্ত ও তার বাবা ব্যবসার কথা বলে আমার থেকে প্রায়ই টাকা নিতেন। আবার ফেরতও দিতেন। সর্বশেষ ৪০ লাখ নিয়েছেন। অন্য কারো থেকে টাকা নিতেন বলে আমার জানা ছিল না। এখন শুনতে পাচ্ছি, আমার মতো ৩০ থেকে ৪০ জন থেকেও কয়েক কোটি টাকা নিয়েছেন।
সুজন মিয়া বলেন, শান্ত আমার বন্ধু। তার বাবা চট্টগ্রামে স্বর্ণের ব্যবসা করেন। স্বর্ণ ক্রয় করার কথা বলে কয়েক দিনের জন্য আমার থেকে ২০ লাখ টাকা নিয়েছেন। টাকাগুলো আমি বিভিন্নভাবে সংগ্রহ করে দিয়েছিলাম। গত শনিবার আমার টাকা ফেরৎ দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু রাত থেকে তার মোবাইল ফোন বন্ধ আছে।
শ্যামল চন্দ্র দাস বলেন, ‘শান্তকে অনেক বিশ্বাস করতাম বলেই আমি আট লাখ টাকা দিয়েছিলাম।’
অনেকের ধারনা, টাকাগুলো আত্মসাৎ করতে শান্ত চোরাই পথে ভারত পালিয়ে গেছেন। ১৮ ফেব্রুয়ারি তার মোবাইল ফোনের সর্বশেষ লোকেশন দেখাচ্ছে কুমিল্লার সীমান্ত এলাকায়। শান্ত টাকা নেয়ার সময় ব্যাংকের চেক ও স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর দিয়ে টাকা নিয়েছেন। তবে অনেকে ডকুমেন্ট ছাড়াই বিশ্বাসের উপর টাকা দিয়েছেন।
নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইফুদ্দিন আনোয়ার বলেন, মঙ্গলবার রাতে বড়িকান্দি ইউনিয়নের থোল্লাকান্দি গ্রামের নির্মল রায় ও তার ছেলে শান্ত কুমার রায়ের বিরুদ্ধে সাতটি অভিযোগপত্র পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Md Al Mamun

জনপ্রিয় খবর

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিপুল পরিমান ভারতীয় মোবাইল আটক!

কোটি টাকা নিয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা পলাতক

Update Time : ০১:৫১:৫৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
স্টাফ রিপোর্টারঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়া নবীনগরে অধিক মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে শান্ত রায় নামের এক ছাত্রলীগ নেতা কয়েক কোটি টাকা নিয়ে ভারত পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগীরা উপজেলার বড়িকান্দি ইউনিয়নের থোল্লাকান্দি গ্রামের শান্ত রায় ও তার বাবা নির্মল রায়ের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার রাতে নবীনগর থানায় কয়েকটি লিখিত অভিযোগ দেন।অভিযুক্ত শান্ত রায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক উপ-সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক।
জানা যায়, শান্ত রাজনীতির পাশাপাশি সিগারেট ও স্বর্ণের ব্যবসা করতেন। এলাকায় প্রচলিত আছে, চট্টগ্রামে তার পিতার কয়েকটি স্বর্ণের দোকান আছে। এরই ভিত্তিতে তিনি এলাকায় বিশ্বস্ত হয়ে ওঠেন । পরে ব্যাংক রেটের চেয়ে উচ্চ লাভের প্রলোভন দেখিয়ে সিগারেট ও স্বর্ণের ব্যবসায় বিনিয়োগের প্রতি মানুষকে উৎসাহিত করেন। এতে মানুষ ব্যাংকে টাকা না রেখে তুলে দিতো শান্তর হাতে। কয়েক বছর ঠিকঠাকভাবেই লেনদেন করছিলেন শান্ত। কিন্তু গত শনিবার থেকে তিনি এলাকায় নেই। অথচ শনিবার ও রোববার অনেককে টাকা ফেরত দেয়ার কথা ছিল। তাই শুরু হয় কানাঘুষা। তখন বেরিয়ে আসে একের পর এক টাকা নেয়ার তথ্য।
শান্ত রায় যাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন ,বাড়াইল গ্রামের হক সাব ৪০ লাখ,সুজন মিয়া ২০ লাখ,আব্বাস উদ্দিন ২০ লাখ ৬০ হাজার, সগির মিয়া ১২ লাখ, শ্যামল চন্দ্র দাস আট লাখ ৬০ হাজার, অক্লান্ত চন্দ্র দেব নাথ ৩ লাখ, নিলখী গ্রামের খোরশেদ আলম পাঁচ লাখ, থোল্লাকান্দি গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম ৩৯ লাখ, থোল্লাকান্দি গ্রামের আতিকুর রহমান রনি ৩ লাখ, বড়িকান্দি ইউনিয়নের মুক্তারামপুর গ্রামের শাহ জালাল ৫৩ লাখ, ধরাভাঙ্গা গ্রামের বাবলু মিয়া ১১ লাখ, বাড়াইল গ্রামের মাহফুজুর রহমান ৩ লাখ, নরসিংদীর বাদল মিয়া ৫ লাখ টাকা।
এছাড়া সলিমগঞ্জ ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক পদ পাইয়ে দেয়ার কথা বলে রিফাত আহম্মেদ থেকে ছয় লাখ।বড়িকান্দি ইউনিয়নের ছাত্রলীগের সভাপতি প্রার্থী জাহিদুল ইসলাম থেকে এক লাখ হাতিয়ে নিয়েছেন শান্ত।
ভুক্তভোগী হক সাহেব জানান, ‘শান্ত ও তার বাবা ব্যবসার কথা বলে আমার থেকে প্রায়ই টাকা নিতেন। আবার ফেরতও দিতেন। সর্বশেষ ৪০ লাখ নিয়েছেন। অন্য কারো থেকে টাকা নিতেন বলে আমার জানা ছিল না। এখন শুনতে পাচ্ছি, আমার মতো ৩০ থেকে ৪০ জন থেকেও কয়েক কোটি টাকা নিয়েছেন।
সুজন মিয়া বলেন, শান্ত আমার বন্ধু। তার বাবা চট্টগ্রামে স্বর্ণের ব্যবসা করেন। স্বর্ণ ক্রয় করার কথা বলে কয়েক দিনের জন্য আমার থেকে ২০ লাখ টাকা নিয়েছেন। টাকাগুলো আমি বিভিন্নভাবে সংগ্রহ করে দিয়েছিলাম। গত শনিবার আমার টাকা ফেরৎ দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু রাত থেকে তার মোবাইল ফোন বন্ধ আছে।
শ্যামল চন্দ্র দাস বলেন, ‘শান্তকে অনেক বিশ্বাস করতাম বলেই আমি আট লাখ টাকা দিয়েছিলাম।’
অনেকের ধারনা, টাকাগুলো আত্মসাৎ করতে শান্ত চোরাই পথে ভারত পালিয়ে গেছেন। ১৮ ফেব্রুয়ারি তার মোবাইল ফোনের সর্বশেষ লোকেশন দেখাচ্ছে কুমিল্লার সীমান্ত এলাকায়। শান্ত টাকা নেয়ার সময় ব্যাংকের চেক ও স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর দিয়ে টাকা নিয়েছেন। তবে অনেকে ডকুমেন্ট ছাড়াই বিশ্বাসের উপর টাকা দিয়েছেন।
নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইফুদ্দিন আনোয়ার বলেন, মঙ্গলবার রাতে বড়িকান্দি ইউনিয়নের থোল্লাকান্দি গ্রামের নির্মল রায় ও তার ছেলে শান্ত কুমার রায়ের বিরুদ্ধে সাতটি অভিযোগপত্র পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।