নিজস্ব প্রতিবেদক: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালত প্রাঙ্গনে আইনজীবীদের বিরুদ্ধে কারাবন্দীরা শ্লোগান দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার ( ০৯ ফেব্রুয়ারী) সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ফটকে ও হাজতে এই ঘটনা ঘটে। পাশাপাশি আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আদালত বর্জন কর্মসূচি পালন করে আসছে আইনজীবীরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকালে ৬৯ জন কারাবন্দী নিয়ে একটি প্রিজন ভ্যান জেলা কারাগার থেকে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনের ফটকে যান। কারাবন্দীরা ভ্যান থেকে নামার সময় নানান অশালীন ভাষায় আইনজীবীদের বিরুদ্ধে শ্লোগান দিতে দেখা যায়। এসময় তাদেরকে বেশ উগ্র আচরণ করতে দেখা যায়। পরে পুলিশ তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে হাজতে প্রবেশ করান। হাজতেও তারা শ্লোগান দিতে থাকে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান চৌধুরী কানন বলেন, এটি পেশকারদের উস্কানি। তারাই কারাবন্দীদের উত্তেজিত করেছে।
একাধিক পেশকারের সাথে কথা হলে তারা বলেন, আমরা কেন আসামীদের উস্কে দিতে যাব। আসামীরা দীর্ঘদিন হাজতে থেকে ক্ষুব্ধ হয়ে থাকতে পারেন।
আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা বলেন, সকালে কিছু কারাবন্দী নিয়ে প্রিজন ভ্যান থেকে নামার সময় ক্ষুব্ধ হয়ে আইনজীবীদের বিরুদ্ধে নানান শ্লোগান দিয়েছেন। শ্লোগানে যা বলেছে, তা মুখে আনতে পারবো না।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মোহাম্মদ ফারুকের বিরুদ্ধে খারাপ আচরণের অভিযোগ তুলে আদালত বর্জন করে আসছেন আইনজীবীরা। গত ১ ডিসেম্বর আইনজীবীরা মামলা দাখিল করতে গেলে বিচারক মোহাম্মদ ফারুক মামলা না নিয়ে তাদের সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য করেন বলে অভিযোগ আইনজীবীদের। এ ঘটনায় ২৬ ডিসেম্বর সভা করে ১ জানুয়ারি থেকে বিচারক ফারুকের আদালত বর্জনের ঘোষণা দেন। এছাড়া বিচারকের সঙ্গে অশোভন আচরণের অভিযোগে ৪ জানুয়ারি কর্মবিরতি পালন করেন আদালতের কর্মচারীরা।
এ অবস্থায় জেলা জজ, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এবং আদালতের নাজির মোমিনুল ইসলামের অপসারণ চেয়ে ৫ জানুয়ারি থেকে পুরো আদালত বর্জনের লাগাতার কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন আইনজীবীরা। পরবর্তীতে দফায় দফায় ৭ কর্মদিবস আদালত বর্জনের কর্মসূচি পালন করেন আইনজীবীরা।
বিচারকের সঙ্গে অশোভন আচরণ ও অশালীন স্লোগান দেওয়ার অভিযোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আইনজীবী সমিতির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ ২৪ আইনজীবীকে দুদফায় তলব করেছেন উচ্চ আদালত।