‘নিখোঁজ’ হওয়ার ছয়দিন পর বাড়ি ফিরে এসেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু আসিফ আহমেদ। বৃহস্পতিবার (০২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের শরীয়তনগরে নিজের বাড়িতে ফিরে আসেন তিনি। এদিন দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন জানিয়েছিলেন আসিফ তার ঢাকার বাসায় অবস্থান করছেন।
বাড়িতে ফিরে আবু আসিফ আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘নির্বাচন যখন কাছাকাছি সময় এসেছে, তখন আমি বেশি চাপ অনুভব করায় নিজেই চলে গিয়েছিলাম। কারণ এই চাপ নিয়ে আমি থাকতে পারব না। এজন্য নির্বাচন ছেড়ে চলে গিয়েছি। নির্বাচন শেষে হয়েছে, আমিও বাসায় চলে এসেছি। আমাকে কেউ কোনো ভয় দেখায়নি।’
তবে আসিফ কী চাপ অনুভব করছিলেন—তা স্পষ্ট করে বলেননি। তবে তার স্ত্রী মেহেরুন নিছা জানিয়েছেন আসিফ তার জীবন নিরাপদ মনে করছিলেন না।
মেহেরুন নিছা সাংবাদিকদের বলেন, ‘নিখোঁজ হওয়ার তিন দিন আগে থেকে নিরাপদ বোধ করছিলেন না। সেজন্য ভেবেছিলেন, আমি দূরে সরে যাই, নির্বাচন শেষ হলে আসব। যাওয়ার সময় এতটাই হতাশায় ভুগছিলেন যে মোবাইল ফোনও বাসায় ফেলে চলে যান। উনি এক কাপড়েই চলে গিয়েছিলেন, এখনও ওই কাপড়ই পরা আছে। ইনি এখন অসুস্থ। মানসিক চাপে থাকলে যেরকম অসুস্থ হয়। যেহেতু ওনাকে পেয়ে গেছি, আমার আর কোনো অভিযোগ নাই।’
তবে গত ২৭ জানুযারি রাত থেকে আসিফের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না বলে দাবি করেছিলেন তার স্ত্রী মেহেরুন নিছা। নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে তার মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন তিনি। এ ঘটনায় গত ৩১ জানুয়ারি থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়।
তার আগে গত রোববার মেহেরুন নিছা এবং বাড়ির কেয়ারটেকারের একটি ফোনালাপ ফাঁস হয়। যাতে শোনা যায়, আসিফ পূর্ব প্রস্তুতি নিয়েই স্বেচ্ছায় ‘আত্মগোপনে’ যান।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘বৃহস্পতিবার দুপুরে সাধারণ ডায়েরি তদন্তে কাজে আসিফের স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। তখন তিনি জানান—আসিফ তার ঢাকার বসুন্ধরা এলাকার বাসায় অবস্থান করছেন। তিনি নিজেই আশুগঞ্জে ফিরে আসবেন। যেহেতু তিনি নিজের ইচ্ছায় বাড়ি ছেড়ে আবার নিজেই ফিরে এসেছেন, সেহেতু এটা নিয়ে পুলিশের আর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার প্রয়োজন নেই।’
উল্লেখ্য, বুধবার (০২ ফেব্রুয়ারি) ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল ও আশুগঞ্জ) আসনের উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে ৪৪ হাজার ৯১৬ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হন স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বিএনপির দলছুট নেতা আব্দুস সাত্তার ভূইয়া। আর আবু আসিফ আহমেদ পান ৩ হাজার ২৬৯ ভোট।