Brahmanbaria ০৪:০৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১০ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হিজড়া হত্যার রহস্য উম্মোচন

  • Reporter Name
  • Update Time : ১২:৩৫:৫০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ জুলাই ২০২৩
  • ১০৭৯ Time View

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় সড়কের পাশ থেকে সোহেল রানা ওরফে দুষ্টু (২৫) নামের এক হিজড়াকে হত্যা করে তারই প্রেমিক রাকিব (২৩)। মঙ্গলবার গ্রেপ্তারের পর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে রাকিব। রাকিব কসবা উপজেলার গুনিনপাড়া (কলেজ পাড়া) এলাকার মো. নাছিরের ছেলে।

এরআগে, শনিবার (১ জুলাই) রাতে আখাউড়া-কসবা আঞ্চলিক সড়কের গোপীনাথপুর এলাকা থেকে সোহেল রানা ওরফে দুষ্টু (২৫) হিজড়ার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। দুষ্টু হিজড়া দিনাজপুর জেলার চিরির বন্দর এলাকার দক্ষিণ সুকদেবপুরের ছাদের আলীর ছেলে।
কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন জানান, সোহেল রানা ওরফে দুষ্টু হিজড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার মনিয়ন্দ এলাকার নাজমা আক্তারের সন্তান অজান্তা হিজড়াকে গুরু মানতেন। সেই সুবাধে সোহেল রানা ওরপে দুষ্টু কসবা উপজেলায় গোপীনাথপুর থেকে হিজড়া সংগঠনের কাজকর্ম করতে থাকতেন। আনুমানিক ৭/৮ মাস পূর্বে সোহেল রানা ওরফে দুষ্টুর সাথে অটোরিকশা চালক রাকিবের পরিচয় হয়। পরিচয় হওয়ার পর থেকে তাদের মধ্যে প্রেমের সর্ম্পক গড়ে উঠে এবং বিভিন্ন সময়ে অটো গাড়ি দিয়ে চলাফেরা করতে থাকে। রাকিব মাঝে মাঝে দুষ্টুর ভাড়াবাসায় এসে মাঝে মাঝে থাকত এবং উভয়ের মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ঝগড়া বিবাদ হতো বলে জানা যায়।
তিনি আরও জানান, ঈদুল আযহার পরদিন ৩০ জুন রাতে দুষ্ট হিজড়া প্রেমিক অটোরিকশা চালক রাকিবকে কল দেয়। ফোন কল পেয়ে রাকিব অটোরিকশা নিয়ে দুষ্টু হিজড়াকে নিয়ে বাসা থেকে বের হয়। কিছুদূর যাওয়ার পর গোপীনাথপুর সেকান্দারপাড়ায় আসার পর দুষ্টু হিজড়া তার প্রেমিক রাকিবকে জানায়, সে তার বাড়ি দিনাজপুরে চলে যাবে। এই কথা শুনে রাকিব ক্ষিপ্ত হয়ে দুষ্টুকে গালাগাল করে। এনিয়ে দুজনের মধ্যে হাতাহাতি হয়। একপর্যায়ে একটি গাছের ঢাল দিয়ে দুষ্টুর মাথায় রাকিব আঘাত করলে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। পরে একটি ইটের ভাঙা অংশ দিয়ে আবারও দুষ্টুর মাথায় আঘাত করে রাকিব। আঘাতপ্রাপ্ত দুষ্টুকে মুমূর্ষু অবস্থায় ফেলে রেখে রাকিব পালিয়ে যায়। একপর্যায়ে রাকিব ফোন দিয়ে দুষ্টুর গুরুর মাকে ফোন দিয়ে জানায় লাশ গোপীনাথপুর সেকান্দারপাড়ায় পড়ে আছে। পরে ফোন বন্ধ করে রাকিব পালিয়ে যায়। কসবা থানা পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান চালিয়ে রাকিবকে গ্রেপ্তার করে।
ওসি জানান, গ্রেপ্তারের পর রাকিব মঙ্গলবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক রাকিবুল হাসানের কাছে ১৬৪ ধারা হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Md Al Mamun

জনপ্রিয় খবর

হিজড়া হত্যার রহস্য উম্মোচন

Update Time : ১২:৩৫:৫০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ জুলাই ২০২৩

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় সড়কের পাশ থেকে সোহেল রানা ওরফে দুষ্টু (২৫) নামের এক হিজড়াকে হত্যা করে তারই প্রেমিক রাকিব (২৩)। মঙ্গলবার গ্রেপ্তারের পর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে রাকিব। রাকিব কসবা উপজেলার গুনিনপাড়া (কলেজ পাড়া) এলাকার মো. নাছিরের ছেলে।

এরআগে, শনিবার (১ জুলাই) রাতে আখাউড়া-কসবা আঞ্চলিক সড়কের গোপীনাথপুর এলাকা থেকে সোহেল রানা ওরফে দুষ্টু (২৫) হিজড়ার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। দুষ্টু হিজড়া দিনাজপুর জেলার চিরির বন্দর এলাকার দক্ষিণ সুকদেবপুরের ছাদের আলীর ছেলে।
কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন জানান, সোহেল রানা ওরফে দুষ্টু হিজড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার মনিয়ন্দ এলাকার নাজমা আক্তারের সন্তান অজান্তা হিজড়াকে গুরু মানতেন। সেই সুবাধে সোহেল রানা ওরপে দুষ্টু কসবা উপজেলায় গোপীনাথপুর থেকে হিজড়া সংগঠনের কাজকর্ম করতে থাকতেন। আনুমানিক ৭/৮ মাস পূর্বে সোহেল রানা ওরফে দুষ্টুর সাথে অটোরিকশা চালক রাকিবের পরিচয় হয়। পরিচয় হওয়ার পর থেকে তাদের মধ্যে প্রেমের সর্ম্পক গড়ে উঠে এবং বিভিন্ন সময়ে অটো গাড়ি দিয়ে চলাফেরা করতে থাকে। রাকিব মাঝে মাঝে দুষ্টুর ভাড়াবাসায় এসে মাঝে মাঝে থাকত এবং উভয়ের মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ঝগড়া বিবাদ হতো বলে জানা যায়।
তিনি আরও জানান, ঈদুল আযহার পরদিন ৩০ জুন রাতে দুষ্ট হিজড়া প্রেমিক অটোরিকশা চালক রাকিবকে কল দেয়। ফোন কল পেয়ে রাকিব অটোরিকশা নিয়ে দুষ্টু হিজড়াকে নিয়ে বাসা থেকে বের হয়। কিছুদূর যাওয়ার পর গোপীনাথপুর সেকান্দারপাড়ায় আসার পর দুষ্টু হিজড়া তার প্রেমিক রাকিবকে জানায়, সে তার বাড়ি দিনাজপুরে চলে যাবে। এই কথা শুনে রাকিব ক্ষিপ্ত হয়ে দুষ্টুকে গালাগাল করে। এনিয়ে দুজনের মধ্যে হাতাহাতি হয়। একপর্যায়ে একটি গাছের ঢাল দিয়ে দুষ্টুর মাথায় রাকিব আঘাত করলে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। পরে একটি ইটের ভাঙা অংশ দিয়ে আবারও দুষ্টুর মাথায় আঘাত করে রাকিব। আঘাতপ্রাপ্ত দুষ্টুকে মুমূর্ষু অবস্থায় ফেলে রেখে রাকিব পালিয়ে যায়। একপর্যায়ে রাকিব ফোন দিয়ে দুষ্টুর গুরুর মাকে ফোন দিয়ে জানায় লাশ গোপীনাথপুর সেকান্দারপাড়ায় পড়ে আছে। পরে ফোন বন্ধ করে রাকিব পালিয়ে যায়। কসবা থানা পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান চালিয়ে রাকিবকে গ্রেপ্তার করে।
ওসি জানান, গ্রেপ্তারের পর রাকিব মঙ্গলবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক রাকিবুল হাসানের কাছে ১৬৪ ধারা হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।