ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় কয়েক দিনের ভারী বর্ষন ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে প্লাবিত হয়েছে সীমান্তবর্তী বায়েক ও গোপিনাথপুর ইউনিয়নের প্রায় ৩২ টি গ্রাম। এতে করে পানিবন্দি হয়ে দুর্ভোগে পড়েছে এসকল গ্রামের শত শত পরিবার। হঠাৎ করে ঢলের পানি এসে বাড়ি-ঘর-বাড়ি,পুকুর, রাস্তা-ঘাট ও রোপনকৃত আমনের জমি তলিয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন পানিবন্দি পরিবারগুলো।
গত দুদিন ধরে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন তারা। রাত হলে অন্ধকার ও সাপ আতংকে একপ্রকার নির্ঘুম রাত কাটাতে হচেছ। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৫টি আশ্রয় কেন্দ্র হলেও অধিকাংশ মানুষই পানিবন্দি। পানির তোড়ে কসবা-নয়নপুর সড়ক ভেংগে গিয়ে তৈরি হয়েছে জনদুর্ভোগ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কয়েকদিন ধরে চলমান ভারী বর্ষন ও ভারত থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে সালদা নদীর পাড় তলিয়ে গিয়ে রাস্তার উপর পানির উপর পানি উঠে যায় এবং কয়েক ঘন্টার মধ্যে পানি দ্রুত বেড়ে গিয়ে গভীর রাতে ঘরবাড়ী তলিয়ে যেতে থাকে। রাতেই মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে পাশ্ববর্তী রাস্তাগুলোতে আশ্রয় নিতে শুরু করে। সকাল থেকেই মানুষ ছোট ছোট শিশু, বৃদ্ধ ও গবাদিপশু নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে থাকেন। রাস্তাঘাট ঘরবাড়ি তলিয়ে গিয়ে কোথাও হাটু পানি আবার কোথাও কোমর থেকে বুক অবধি পানি। এই পানি ভেংগেই ছুটছে মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে। বিশেষ করে বায়েক ইউনিয়নের ৩৪ গ্রামের মধ্যে প্রায় ৩০ গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েন।
ঘরবাড়ি থেকে বেরুতে পারছেনা তারা। খাবারের অভাবে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। চতুর্দিকে পানি আর পানি। দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের অভাব। ঢলের পানিতে কয়েকশ পুকুর তলিয়ে গিয়ে কোটি কোটি টাকার লোকসানে পড়েছে মৎস্য চাষিরা। তলিয়ে গেছে শত শত হেক্টর রোপনকৃত আমন ক্ষেত। এতে দুশ্চিন্তায় পড়েছে কৃষক। এত পানি জীবনেও দেখেননি এই সীমান্তবাসীরা। পানি বন্দি পরিবারগুলোর মাঝে শুকনো খাবার দিচ্ছেন এলাকার বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ শাহরিয়ার মুক্তার জানান, গতকাল শুক্রবার বিকেলে উপজেলা প্রশাসন পক্ষ থেকে পানি বন্দি মানুষের মাঝে শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানি বিতরন করা হয়েছে। পানির চাপ কমছে এবং পানিবন্দি বাড়িঘরে ত্রান পৌছানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচেছন বলেও তিনি জানান।