ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রেলস্টেশন ও আখাউড়া রেলওয়ের দুইটি বেওয়ারিশ লাশের জানাযা ও দাফনকাজ সম্পন্ন করেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাতিঘর। আজ সোমবার দুপুর ২টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার পূর্ব মেড্ডা সার গুদামে জানাযার নামায শেষে তিতাস নদীর পাড়ে অবস্থিত বেওয়ারিশ লাশের কবরস্থানে অজ্ঞাত (৫০) বছর বয়সী এক পুরুষ ও অজ্ঞাত (৬৫) বছর বয়সী এক নারীর লাশ দাফনকাজ সম্পন্ন হয়।
আখাউড়া রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার জসিম উদ্দিন জানান, গত মঙ্গলবার (২ জুলাই) রাত সাড়ে ১০টার দিকে আখাউড়া রেলওয়ে থানাধীন আখাউড়া-গঙ্গাসাগর মধ্যবিত্ত রেললাইনের উপর অজ্ঞাতনামা ট্রেনে নিচে কাটা পড়ে অজ্ঞাত এক পুরুষ নিহত হয়। ওই ব্যক্তির পরিচয় শনাক্ত করতে পিবিআইকে ফিঙ্গারপ্রিন্ট নিতে বলা হয় এবং তার পরিচয় শনাক্ত হয়নি বলে বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে দাফন করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাতিঘরের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো.আজহার উদ্দিন ও সংগঠনের সদস্যরা।
এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির (আইসি) এসআই (নিঃ) সুব্রত বিশ্বাস জানান, গত বুধবার (৩ জুলাই) ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে থানাধীন ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনে অবস্থানরত নোয়াখালী অভিমুখী নোয়াখালী মেইল ট্রেন থেকে অজ্ঞাত (৬৫) এক বৃদ্ধার লাশ উদ্ধার করি। ওই বৃদ্ধার পরিচয় শনাক্ত করতে পিবিআইকে ফিঙ্গারপ্রিন্ট নিতে বলা হয় এবং তারও পরিচয় শনাক্ত হয়নি বলে বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে দাফন করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাতিঘর।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাতিঘরের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার আজহার উদ্দিন জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া-গঙ্গাসাগর মধ্যবিত্ত রেললাইনের উপর অজ্ঞাতনামা ট্রেনে নিচে কাটা পড়ে অজ্ঞাত এক পুরুষ নিহত হয় এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনে অবস্থানরত নোয়াখালী অভিমুখী নোয়াখালী মেইল ট্রেন থেকে অজ্ঞাত (৬৫) এক বৃদ্ধার লাশ উদ্ধার করে রেলওয়ে পুলিশ৷ কিন্তু নিহত কারও পরিচয় পাওয়া যায়নি। বেওয়ারিশ লাশের কোন পরিচয় পাওয়া যায়নি বলে বেওয়ারিশ লাশ গুলো দাফনকাজ করার সিদ্ধান্ত নেয় সোমবার দুপুরে পূর্ব মেড্ডা সার গুদামে জানাযার নামায শেষে তিতাস নদীর পাড়ে অবস্থিত বেওয়ারিশ লাশের কবরস্থানে দুইটি কবর কুঁড়ে বেওয়ারিশ লাশ গুলো দাফনকাজ সম্পন্ন করি।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা করা ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাতিঘর’ এখন পর্যন্ত ১৫৬ জনের মতো ‘পরিচয়হীন’ ও ‘স্বজনহীন’ লাশ দাফনকাজ সম্পন্ন করেছে। ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাতিঘর’ এখন পরিচয়হীন ও স্বজনহীন লাশ দাফনে শেষ ঠিকানা। এছাড়াও করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া একাধিক ব্যক্তির লাশ দাফনেও সহায়তা করেছেন ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাতিঘর’ এর সদস্যরা। তারা রোগীদের রক্তদানের পাশাপাশি অজ্ঞাত রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেয়।