দখল ও দূষণে ও স্বেচ্ছাচারিতার শিকার হয়ে রীতিমতো অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে কুমিল্লা ও ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার পাঁচ উপজেলার জনগুরুত্বপূর্ণ নদী ‘অদের খাল’। নদীর
রাজাবাড়ী অংশে নকশা বহির্ভূত অনুমোদন বিহীন ব্রিজ নির্মাণের ফলে বর্ষায় নৌ-রুট বন্ধ আর শুস্ক মৌসুমে নাব্যতা সংকটে সেচ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন অন্তত ৬০ থেকে ৭০ গ্রামের কৃষক।
অদের খাল, কুমিল্লা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পাঁচ উপজেলার মাঝ দিয়ে প্রবাহিত হওয়া একটি সরু নদী। ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য থেকে উৎপত্তি হওয়া নদীটি সালদা নদী নামে কসবা উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বুড়ি নদীর সাথে মিলিত হয়। সেখান থেকে পশ্চিম দিকে বয়ে যাওয়া স্রোতধারার নাম অদের খাল। অদের খাল নামে নদীর স্রোতধারা মিলিত হয়েছে মেঘনায়। প্রায় ৩০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে অদের খাল মিলিত হয়েছে মেঘনায়। যুগযুগ ধরে নদীটি একপাশে ব্রাহ্মণবাড়ীয়ার নবীনগর, বাঞ্ছারামপুর এবং অপর পাশে কুমিল্লার মুরাদনগর ও হোমনা উপজেলার মানুষের জীবনযাত্রার সাথে
নিবিড়ভাবে জড়িয়ে রয়েছে।
একসময় একমাত্র নৌ-রুট অদের খাল দিয়ে এই এলাকার প্রসিদ্ধ হাট-বাজারের পণ্যসামগ্রী পরিবহণে বেশ গুরুত্ব বহন করলেও সময়ের ব্যবধানের এটি পরিণত হয়েছে মরা নদীতে! নদীটির বাংগরা বাজার ও গাজীর হাট অংশে বাজারের ময়লা আবর্জনা ফেলে প্রায় বন্ধ করে ফেলা হয়েছে নদীর গতিপথ। এছাড়াও অদের খাল ও এর শাখা খালের দুই পাশে দোকান ঘর ও বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে। এমন দখল ও দূষণের চিত্র রয়েছে বিভিন্ন স্থানে।
এছাড়া নদীর রাজাবাড়ি অংশে নকশা বহির্ভূত ভাবে ব্যক্তি উদ্যোগে বেইলী ব্রিজ নির্মাণের ফলে বর্ষায় বন্ধ হয়ে গেছে এই অঞ্চলের একমাত্র নৌ-রুট।
সম্প্রতি নদীটির বিভিন্ন অংশ পরিদর্শন করেন নদী ও প্রকৃতি সুরক্ষা সামাজিক আন্দোলন ‘তরী বাংলাদেশ’ এর একটি প্রতিনিধিদল। তারা খালটি খনন,অবৈধ ব্রিজ অপসারণ ও অবৈধ দখল মুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন নদীতীরে মানববন্ধন করেন।
দখল দূষণের শিকার হয়ে এবং অবৈধ স্থাপনার কবলে পড়ে অস্তিত্ব সংকটে পড়া অদের খাল আবারও প্রাণবন্ত হয়ে উঠবে এমনটাই প্রত্যাশা এই এলাকার মানুষের।