Brahmanbaria ০১:৩৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Last News :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিপুল পরিমান ভারতীয় মোবাইল আটক! ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আন্তর্জাতিক গ্রামীন নারী দিবস পালিত আখাউড়ায় ভারতীয় নাগরিকসহ ২ জন আটক! ঢাকাস্থ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সমিতির পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন সভাপতি এম এ খালেক ও সম্পাদক শ্যামল  বিজয়নগরে পরকিয়ার নামে মিথ্যা প্রচারের দাবি ভুক্তভোগীর! ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ডেলটা লাইফ ইনসিওরেন্স কোম্পানীর স্বামীর মৃত্যুর দাবীর চেক প্রধান ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সেতু এন্টারপ্রাইজ প্রাইজমানি ফুটবল টুর্নামেন্ট ফাইনালে কসবা বিজয়ী ভারতে যাওয়ার সময় মা-ছেলে আটক ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সপ্তাহে আলোচনা  ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অজ্ঞাত নারীর লাশ উদ্ধার

সৌদি আরবের মক্কায় আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় তৃতীয় স্থান অধিকার করেছেন হাফেজ ফয়সাল আহমেদ

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৬:২০:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • ১০৪৮ Time View

সৌদি আরবের মক্কায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় দেশের জন্য সুনাম বয়ে এনেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কৃতি সন্তান হাফেজ ফয়সাল আহমেদ। তিনি জেলার বিজয়নগর উপজেলার ইছাপুরা ইউনিয়নের কুতুবপুর গ্রামের মোঃ সিরাজ মিয়ার ছেলে। স্থানীয় সময় বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) এশার নামাজের পর বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্যদিয়ে সৌদি আরবের বাদশাহ সালমানের পক্ষ থেকে বিজয়ী ফয়সালের হাতে পুরস্কার তুলে দেন মক্কার ডেপুটি গভর্নর প্রিন্স বদর বিন সুলতান।

প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়া ১৬৬ জন প্রতিযোগীর মধ্যে ফয়সাল আহমেদ তৃতীয় স্থান অধিকার করেন। যার পুরস্কার স্বরুপ তাকে দেয়া হয় এক লাখ ৮০ হাজার সৌদি রিয়াল (প্রায় ৫২ লাখ ৬২ হাজার ৫৭৯ টাকা) ও সম্মাননা পদক। ফয়সাল রাজধানীর মারকাজুত তাহফিজ ইন্টারন্যাশনাল মাদরাসায় পড়াশোনা করছেন। তার পিতা মোঃ সিরাজ মিয়া দীর্ঘ দিন সৌদি আরবে প্রবাস জীবন কাটিয়ে বর্তমানে বিজয়নগর উপজেলার ইছাপুরা ইউনিয়নের কুতুবপুর গ্রামে কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। হাফেজ ফয়সালের একজন ছোট বোন রয়েছে। তিনি তারা পিতা-মাতার বড় সন্তান।

হাফেজ ফয়সাল আহমেদের পিতা মোঃ সিরাজ মিয়া বলেন, ফয়সাল আহমেদ ছোট থেকেই ইসলামী পড়ালেখার প্রতি বেশ মনোযোগী ছিল। সে সব সময় স্বপ্ন দেখত ইসলামী বিষয়ে ভালোভাবে পড়া লেখা করে একজন আলেম হবেন। সে স্বপ্ন নিয়েই সে এগিয়ে যাচ্ছে। তার প্রথম হেফজ বিষয়ে শিক্ষাজীবন শুরু হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার মৈন্দ বারুরা দারুল উলুম হাফেজিয়া মাদ্রাসা থেকে। এরপর সে জেলা শহরের ইকরা মাদ্রাসায় কিছু সময় পড়াশোনা করে। বর্তমানে ফয়সাল রাজধানীর মারকাজুত তাহফিজ ইন্টারন্যাশনাল মাদরাসায় পড়াশোনা করেছেন। সে সৌদি আরবে এত প্রতিযোগিদের মাঝে অংশগ্রহন করে তৃতীয় স্থান অধিকার করে যে সুনাম বয়ে এনেছে তাতে পিতা হিসেবে আমি গর্বিত। আমি চাই আমার ছেলে একজন ভালো মানুষ ও একজন ভালো আলেম হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলুক।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা মা জানান, ফয়সাল আহমেদ সব সময় বলতো সে ইসলামী শিক্ষার মাধ্যমে আল্লাহর ঘর দখবে। প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে দেশের জন্য সুনাম বয়ে আনবে। আমার ছেলে এত বড় কৃতিত্ব অর্জন করেছে আমি তাতে গর্বিত। আমরা স্বপ্ন দেখি ফয়সাল যেন নিজেকে এক ভাল আলেম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারেন এবং ইসলামের খেদমতের পাশাপাশি দেশ ও মানুষের কল্যাণে কাজ করে যেতে পারেন।

এ বিষয়ে ইছাপুরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়াউল হক বকুল জানান, ফয়সালের এই কৃতিত্ব কেবল ইয়াছাপুরা ইউনিয়নের নয় বরং ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ সমগ্র বাংলাদেশের কৃতিত্ব। তার এমন অর্জনে আমরা সকলেই গর্বিত। তিনি দেশে এলে আমাদের ইউনিয়নবাসীর পক্ষ থেকে তাকে সম্মাননা জানানো হবে।

গত ২৫ আগস্ট সৌদি আরবের ইসলাম ও দাওয়াহ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তত্ত¡াবধানে মক্কায় ৪৩তম বাদশাহ আবদুল আজিজ আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতা শুরু হয়। এতে বিশ্বের ১১৭টি দেশ থেকে ১৬৬ প্রতিযোগী অংশ নেন।
পাঁচ বিভাগে অনুষ্ঠিত এ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের সর্বমোট ৪০ লাখ সৌদি রিয়াল পুরস্কার দেয়া হয়।

প্রতিযোগিতায় পূর্ণ কোরআন হিফজ বিভাগে তৃতীয় হয়ে হাফেজ ফয়সাল আহমেদ পুরস্কার হিসেবে এক লাখ ৮০ হাজার সৌদি রিয়াল (প্রায় ৫২ লাখ ৬২ হাজার ৫৭৯ টাকা) ও সম্মাননা পদক পান।

এছাড়াও প্রতিযোগিতায় আরেক প্রতিযোগি হাফেজ মোঃ মুশফিকুর রহমান পবিত্র কোরআনের ১৫ পারা হিফজ বিভাগে অংশ নিয়েছেন। চতুর্থ হয়ে পুরস্কার হিসেবে তিনি এক লাখ ২০ হাজার সৌদি রিয়াল (প্রায় ৩৫ লাখ ৮ হাজার ৩৮৬ টাকা) ও সম্মাননা পদক পেয়েছেন। তিনি কক্সবাজারের মা’হাদ আন-নিবরাসে কোরআন হিফজ সম্পন্ন করেছেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Md Al Mamun

জনপ্রিয় খবর

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিপুল পরিমান ভারতীয় মোবাইল আটক!

সৌদি আরবের মক্কায় আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় তৃতীয় স্থান অধিকার করেছেন হাফেজ ফয়সাল আহমেদ

Update Time : ০৬:২০:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩

সৌদি আরবের মক্কায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় দেশের জন্য সুনাম বয়ে এনেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কৃতি সন্তান হাফেজ ফয়সাল আহমেদ। তিনি জেলার বিজয়নগর উপজেলার ইছাপুরা ইউনিয়নের কুতুবপুর গ্রামের মোঃ সিরাজ মিয়ার ছেলে। স্থানীয় সময় বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) এশার নামাজের পর বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্যদিয়ে সৌদি আরবের বাদশাহ সালমানের পক্ষ থেকে বিজয়ী ফয়সালের হাতে পুরস্কার তুলে দেন মক্কার ডেপুটি গভর্নর প্রিন্স বদর বিন সুলতান।

প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়া ১৬৬ জন প্রতিযোগীর মধ্যে ফয়সাল আহমেদ তৃতীয় স্থান অধিকার করেন। যার পুরস্কার স্বরুপ তাকে দেয়া হয় এক লাখ ৮০ হাজার সৌদি রিয়াল (প্রায় ৫২ লাখ ৬২ হাজার ৫৭৯ টাকা) ও সম্মাননা পদক। ফয়সাল রাজধানীর মারকাজুত তাহফিজ ইন্টারন্যাশনাল মাদরাসায় পড়াশোনা করছেন। তার পিতা মোঃ সিরাজ মিয়া দীর্ঘ দিন সৌদি আরবে প্রবাস জীবন কাটিয়ে বর্তমানে বিজয়নগর উপজেলার ইছাপুরা ইউনিয়নের কুতুবপুর গ্রামে কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। হাফেজ ফয়সালের একজন ছোট বোন রয়েছে। তিনি তারা পিতা-মাতার বড় সন্তান।

হাফেজ ফয়সাল আহমেদের পিতা মোঃ সিরাজ মিয়া বলেন, ফয়সাল আহমেদ ছোট থেকেই ইসলামী পড়ালেখার প্রতি বেশ মনোযোগী ছিল। সে সব সময় স্বপ্ন দেখত ইসলামী বিষয়ে ভালোভাবে পড়া লেখা করে একজন আলেম হবেন। সে স্বপ্ন নিয়েই সে এগিয়ে যাচ্ছে। তার প্রথম হেফজ বিষয়ে শিক্ষাজীবন শুরু হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার মৈন্দ বারুরা দারুল উলুম হাফেজিয়া মাদ্রাসা থেকে। এরপর সে জেলা শহরের ইকরা মাদ্রাসায় কিছু সময় পড়াশোনা করে। বর্তমানে ফয়সাল রাজধানীর মারকাজুত তাহফিজ ইন্টারন্যাশনাল মাদরাসায় পড়াশোনা করেছেন। সে সৌদি আরবে এত প্রতিযোগিদের মাঝে অংশগ্রহন করে তৃতীয় স্থান অধিকার করে যে সুনাম বয়ে এনেছে তাতে পিতা হিসেবে আমি গর্বিত। আমি চাই আমার ছেলে একজন ভালো মানুষ ও একজন ভালো আলেম হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলুক।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা মা জানান, ফয়সাল আহমেদ সব সময় বলতো সে ইসলামী শিক্ষার মাধ্যমে আল্লাহর ঘর দখবে। প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে দেশের জন্য সুনাম বয়ে আনবে। আমার ছেলে এত বড় কৃতিত্ব অর্জন করেছে আমি তাতে গর্বিত। আমরা স্বপ্ন দেখি ফয়সাল যেন নিজেকে এক ভাল আলেম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারেন এবং ইসলামের খেদমতের পাশাপাশি দেশ ও মানুষের কল্যাণে কাজ করে যেতে পারেন।

এ বিষয়ে ইছাপুরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়াউল হক বকুল জানান, ফয়সালের এই কৃতিত্ব কেবল ইয়াছাপুরা ইউনিয়নের নয় বরং ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ সমগ্র বাংলাদেশের কৃতিত্ব। তার এমন অর্জনে আমরা সকলেই গর্বিত। তিনি দেশে এলে আমাদের ইউনিয়নবাসীর পক্ষ থেকে তাকে সম্মাননা জানানো হবে।

গত ২৫ আগস্ট সৌদি আরবের ইসলাম ও দাওয়াহ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তত্ত¡াবধানে মক্কায় ৪৩তম বাদশাহ আবদুল আজিজ আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতা শুরু হয়। এতে বিশ্বের ১১৭টি দেশ থেকে ১৬৬ প্রতিযোগী অংশ নেন।
পাঁচ বিভাগে অনুষ্ঠিত এ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের সর্বমোট ৪০ লাখ সৌদি রিয়াল পুরস্কার দেয়া হয়।

প্রতিযোগিতায় পূর্ণ কোরআন হিফজ বিভাগে তৃতীয় হয়ে হাফেজ ফয়সাল আহমেদ পুরস্কার হিসেবে এক লাখ ৮০ হাজার সৌদি রিয়াল (প্রায় ৫২ লাখ ৬২ হাজার ৫৭৯ টাকা) ও সম্মাননা পদক পান।

এছাড়াও প্রতিযোগিতায় আরেক প্রতিযোগি হাফেজ মোঃ মুশফিকুর রহমান পবিত্র কোরআনের ১৫ পারা হিফজ বিভাগে অংশ নিয়েছেন। চতুর্থ হয়ে পুরস্কার হিসেবে তিনি এক লাখ ২০ হাজার সৌদি রিয়াল (প্রায় ৩৫ লাখ ৮ হাজার ৩৮৬ টাকা) ও সম্মাননা পদক পেয়েছেন। তিনি কক্সবাজারের মা’হাদ আন-নিবরাসে কোরআন হিফজ সম্পন্ন করেছেন।