ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বৈদ্যুতিক খুঁটি স্থাপনের নামে অবৈধ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে একটি চক্র। আর এই চক্রের দাবি, খুঁটি নিতে টাকার ভাগ দিতে হয় নির্বাহী প্রকৌশলীকে। প্রতিটি খুঁটি নিতে ব্যাংক ড্রাফটের কথা বলে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা নিচ্ছেন তারা। সাংবাদিকদের কাছে টাকা নেওয়ার কথা অকপটে স্বীকারও করেছেন তারা।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার প্রতিটি এলাকায় বৈদ্যুতিক লাইনের খুঁটি নিতে ১৫ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা নিয়ে থাকেন স্থানীয় কতিপয় লাইনম্যান পরিচয়ে দালাল। তারা স্থানীয়দের কাছে পরি সরাইল উপজেলা বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড অফিসের স্টাফ। বৈদ্যুতিক নতুন সংযোগ, ট্রান্সফরমার নেওয়া ও লাইনের সমস্যা সবই করে থাকেন। এরমধ্যে তিনটি এলাকার তিনজন লাইনম্যান নামক দালালের কথা হয় এই প্রতিবেদকের।
উপজেলার চুন্টা এলাকার দায়িত্বে থাকা দুলাল মিয়া বিদ্যুৎ বিভাগের সব কাজ করে থাকেন। তার কাছে সাংবাদিক পরিচয় গোপন করে খুঁটি নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ২০ হাজার টাকা প্রতিটি খুঁটির জন্য দাবি করে।
রসুলপুল এলাকায় নতুন খুঁটি নিতে ২০ হাজার টাকা দাবি করেন কামাল নামের একজন। তিনি বলেন, এর থেকে সাড়ে ৮ হাজার টাকা অফিসে দিতে হয়। এছাড়া বাকি টাকা লাইনম্যান ও যাতায়াত খরচে চলে যায়।
জিলোকদার পাড়ার মোজাম্মেল নামের আরেক লাইনম্যান ২০ হাজার টাকা দাবি করেন একটি খুঁটির জন্যে। তবে তিনি পরে ২ হাজার টাকা কম রাখা যাবে বলে জানান।
এই খুঁটি বানিজ্য নিয়ে সরাইল উপজেলার বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আব্দুর রউফের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ ঠিকাদাররাও। তার তিনি টাকা নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঠিকাদারদের জোরপূর্বক খুঁটি স্থাপন করে দিতে চাপ প্রয়োগ করার অভিযোগ রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ পিডিবির তালিকাভুক্ত ঠিকাদাররা।
এই বিষয়ে পিডিবির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স জব্বার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মালিক মোনায়েম খান ও রহমান ট্রেডার্সের মালিক গোলাম রব্বানী বলেন, তিনি কোন প্রকার ওয়ার্ক অর্ডার না থাকার পরও বিভিন্ন কাজ করিয়েছেন। এসব বিষয়ে প্রতিবাদ জানানোতে তিনি আমাদের এমবি বই আটকে রেখেছে। আমরা ইতিমধ্যে এসব বিষয় উল্লেখ করে প্রধান প্রকৌশলীর কাছে অভিযোগ দিয়েছি।
তবে সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সরাইল বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আব্দুর রউফ। তিনি বলেন, অভিযুক্ত লাইনম্যান নামদারিরা কেউ পিডিবির নন। খুঁটি নিতে কোন টাকা নেওয়া হচ্ছে না। আমরা নিয়ম অনুযায়ী কাজ করে যাচ্ছি। ঠিকাদারদের অভিযোগও সঠিক নয়।