ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে পারিবারিক কলহের জেরে মণি রানী নাগ (৩৮) নামের এক স্কুল শিক্ষিকার আত্মহত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
রোববার (১৩ আগস্ট) বিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তিনি মারা যান।
মণি নাগ উপজেলার শাহবাজপুরের অজিত নাগের একমাত্র মেয়ে। মনি রানী নাগ উপজেলার কালিশিমুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা ছিলেন। তার স্বামী উপজেলার অরুয়াইলের ফটো স্টুডিও ব্যবসায়ী অনিক রায়। ঘটনার পর পুলিশ তার স্বামীকে আটক করেছে।
পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্র জানায়, প্রায় ১৮ বছর আগে মণি রাণী নাগকে উপজেলার অরুয়াইল ইউনিয়নের সাহাপাড়ার জিতু ধরের ছেলে অনিক রায়ের সাথে বিয়ে দেওয়া হয়। বিয়ের সময় যৌতুক হিসাবে মণির বাবা অনিককে ২ লাখ টাকার আসবাবপত্র দিয়েছিলেন। বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই মণি’র উপর অত্যাচার নির্যাতন শুরু করেন স্বামী অনিক। তারপরও সংসার করে যাচ্ছিলেন মণি। বিয়ের দুই বছর পর মণি কালিশিমুল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষিকা হিসেবে নিয়োগ পান। এরই মাঝে তাদের সংসারে দুটি কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। তারপরও স্বামী অনিকের নির্যাতনের থেমে থাকেনি। বাকবিতন্ডা ও হাতাহাতি ছিল তাদের নিত্যনৈমিত্তিক বিষয়। এসব ঘটনায় তাদের মধ্যে মামলা মোকদ্দমাও হয়। দুটি মেয়ের কথা ভেবে সেই মামলা সালিশের মাধ্যমে নিস্পত্তি করেন মণি রানী নাগ। কিন্তু সেই সুখ আর হয়নি মণি’র। এরই ধারাবাহিকতায় রোববার দুপুরের পর আত্মহত্যা করতে চাউলে দেওয়ার কেড়ির বড়ি খেয়ে ফেলেন মণি নাগ। পরিবারের সদস্যরা বিষ খাওয়ার বিষয়টি আচ করতে পেরে স্বামী অনিক সহ মণিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মণির চিকিৎসা শুরু করলে এই সুযোগে পালিয়ে যায় স্বামী অনিক। এর কিছুক্ষণ পর মণি রানী নাগ মারা যান।
সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়। তার স্বামী অনিক রায়কে আটক করা হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্যে জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।