ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় ইউএনও অফিসের এক কর্মচারী অন্যের এক নববধু কে নিয়ে লাপাত্তার অভিযোগ উঠছে।রোববার (২১ মে) বেলা ১২টার দিকে পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের হরিজন পল্লীতে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সাংবাদিকদের বিষয়টি জানানো হয়।এর আগে গত ১৮ মে রানা হরিজন পূর্ব পরিকল্পিতভাবে সকাল ৭টার দিকে মেয়েকে ফুসলিয়ে প্রেমের ফাঁদে ফেলে তাকে অপহরণ করে রানা। লাপাত্তা হয়ে যাওয়া রানা হরিজন হরিজন পল্লীর গাবুল হরিজনের ছেলে। সে আখাউড়া উপজেলা কার্যালয়ে পরিছন্ন কর্মচারী হিসেবে কর্মরত।
সংবাদ সম্মেলনে কুশমী হরিজনের পক্ষে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন ভাতিজা আকাশ বাসফোর। তিনি বলেন,আমার চাচির ৪ মেয়ে কোনো ছেলে সন্তান নেই। উনার বড় দুই মেয়েকে অনার্স পর্যন্ত পড়াশোনা করে বিয়ে দিয়েছে। তিন নম্বর মেয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ৯ম শ্রেণিতে অধ্যয়নত করত। স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার কার্যালয়ে কর্মরত কর্মচারী রানা হরিজন উনার নাবালিকা মেয়েকে উত্ত্যক্ত করাসহ বিভিন্নভাবে হয়রানি ও ব্ল্যাকমেইল করে আসছিল। সে বিভিন্ন সময়ে ব্ল্যাকমেইল করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। প্রতিবাদ করলে তার প্রভাবশালী গোষ্ঠী ভাই-ভাতিজাদের নিয়ে
আমাদের উপর একাধিক বার হামলা চালিয়েছে। রানার পরিবারের অভিভাবক তার বড় দুই ভাইকে বিষয়টি জানানো হলেও তারা কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়নি।
তিনি আরও বলেন, বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় সমাজপতি বরাবর অভিযোগ জানালে তারা একাধিক বার রানা হরিজনের বিচার সালিশ করে মীমাংসা করার চেষ্টা করে। কিন্তু পরবর্তীতে সে (রানা) আবারও এই অবুঝ মেয়েকে উত্ত্যক্ত করতে থাকে। পরে আখাউড়া পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও
স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে বিচার প্রার্থী হলে তারা বিষয়টি মীমাংসা করে দেন। পরবর্তীতে রানা হরিজন আবারও মেয়েটিকে ফোন করে ডিস্টার্ব করা শুরু করে।
মেয়ের মা কুশমী হরিজন কান্নাজড়িত কন্ঠে সাংবাদিকদের বলেন, রানার অত্যাচারে নিরুপায় হয়ে আমি আমার মেয়েকে বিবাহ দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহন করি। সেই অনুযায়ী শেরপুরে বিবাহ ঠিকঠাক করি। বিয়ের ঠিক ৭ দিন আগে রানা হরিজন ‘নুপুর রানী’ নামের একটি ফেক আইডি থেকে আমার মেয়ের সাথে তার একটা ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করে বিয়ে ভাঙার চেষ্টা করে।
পরে বিষয়টি এলাকার কাউন্সিলরকে অবগত করে
পরবর্তীতে বিষয়টি আমি আখাউড়া থানা ওসি বরাবর অভিযোগ করি, আমার অভিযোগের প্রেক্ষিতে থানার এসআই মোবারক রানা হরিজনকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে কৌশলে পুরো বিষয়টি অস্বীকার করে। এক পর্যায়ে গত ৩ মে আমি আমার নাবালিকা মেয়েকে বাধ্য হয়ে ১০ লক্ষাধিক টাকা ব্যয় করে বিয়ে দেয়। তিনি আরও জানান, গত ১৮ মে রানা হরিজন পূর্ব পরিকল্পিতভাবে সকাল ৭টার দিকে আমার মেয়েকে ফুসলিয়ে প্রেমের ফাঁদে ফেলে আমার মেয়ের বিয়ের প্রায় আড়াই ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ ৯০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়ে তাকে অপহরণ করে এখন পর্যন্ত আত্মগোপনে রয়েছে। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।
এ বিষয়ে রানার বাবা গাবুল হরিজন বলেন, আমার ছেলেকে নিয়ে ওই মেয়ে পালিয়েছে। এখন কোথায় আছে আমরা কেউ জানি না। ছেলেকে দ্রুত ফিরিয়ে দেওয়ার কথা জানান তিনি।
আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আসাদুল ইসলাম বলেন, মেয়েটির বিয়ে হয়েছে কিছুদিন আগে। বিয়ে হওয়ার পরেও সে তার প্রেমিক রানার সাথে স্বেচ্ছায় পালিয়ে গেছে তবে তাদের উদ্ধার করার জন্য পুলিশের বিশেষ একটি দল কাজ করছে।
আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অংগ্যজাই মারমা বলেন,অভিযুক্ত রানা হরিজনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।