Brahmanbaria ০১:৩১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১০ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নবীনগরে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সরকারি ইজারাকৃত পুকুরে, মাছ লুটপাটের অভিযোগ 

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৯:২০:২৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৬ মে ২০২৩
  • ১০৮০ Time View
মমিনুল হক রুবেল, নবীনগর প্রতিনিধিঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়া নবীনগরে সরকারি ইজারার পুকুরের মাছ,বাঁশ লুটপাট করে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে কাইতলা দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শওকত আলীর বিরুদ্ধে।গত ১৯ মে ২০২২ সালে এক অর্থ বছরের জন্য  ইজারা নেয়া ১৮০/১৩৬ দাগের ৩.১৬ একর কাইতলা জমিদার বাড়ির খাস পুকুরের ইজারার মেয়াদ ১৫ দিন থাকা সত্বেও ঐ ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান রাস্তা করার নামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর  সহযোগিতা ছাড়া স্থানীয় তার অনুসারীদের দিয়ে মাছ বাঁশ লুটপাট করে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ তুলেছে ইজারাদার কাজী ফেরদৌস।
কাজী ফেরদৌস অভিযোগ করে বলেন, জমিদার বাড়ির পুকরটি সরকারি খাস খতিয়ানে যাওয়ার পর শওকত আলী চেয়ারম্যান তার সাঙ্গপাঙ্গ দিয়ে ১৯৯৭ সালে তৎকালীন সাংসদ এডভোকেট আবদুল লতিফের সময় জাল দলিল করে আত্মসাৎ করার পায়তারা করে।পরে ঐ সংসদ সদস্যের নির্দেশে কাজী ফেরদৌস সভাপতি হয়ে এলাকার মৎসজীবিদের নিয়ে তিতাস মৎসজীবি সমবায় সমিতি গঠন করে জাল দলিলের বিরুদ্ধে নবীনগর থানায় মামলা দায়ের করেন।এতে শওকত গংরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে সাংসদ এডভোকেট আবদুল লতিফ মারা যাওয়ার পর কাজী আনোয়ার নবীনগরের সংসদ সদস্য হওয়ার পর বিষয়টি সমাধান করে দিয়ে তিতাস মৎসজীবি সমিতি কে ৩ বছরের ইজারা দেয়।দীর্ঘদিন ধরে ইজারা নেয়া ঐ মৎসজীবি সমিতির সদস্যদের মৎস কার্ড না থাকায় ২০২২ সালের খাস কালেকশনে নিয়ে সরকার ঐ সালের ১৯ মে আমাকে এক অর্থ বছরের জন্য ইজারা দেয়।কিন্তু ইংরেজি মাসের হিসেব মতে চলতি মাসের ১৯ তারিখ পর্যন্ত সময় থাকা সত্বেও ৪ মে কাইতলা দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শওকত আলী তার সাঙ্গপাঙ্গ দিয়ে পুরো পুকুরে মাছ বাঁশ লুটপাট করে নিয়ে যায়।এসময় আমি লোকজন নিয়ে পুকুরে গিয়ে বাঁধা দিতে গেলে উল্টো আমাকে হুমকি ধামকির স্বীকার হয়।পরে বিষয়টির প্রতিকার চাইতে উপজেলা প্রশাসন কে অবগত করি।
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি  সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া জানান,শওকত আলী চেয়ারম্যান ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা ৩/৪ শত লোক নিয়ে এসে আমাদের চোখের সামনে পুকুরের মাছ, বাঁশ লুটপাট করে নিয়ে গিয়েছে,আমরা বাঁধা দিলে সে ও তার লোকজন আমাদের সাথে অশ্লীল ভাষায় কথা বলে।
অপর এক প্রত্যক্ষদর্শী মিন্টু মিয়া জানান, খবর পেয়ে বাজার থেকে এসে দেখি শওকত চেয়ারম্যান তার লোকদের নির্দেশ দিচ্ছে সব মাছ, বাঁশ উঠিয়ে নিয়ে যেতে।
মাছ লুটপাটের ঘটনায় যুক্ত থাকা সৈয়দ নাজমুল হাসান বলেন,আমরা মাছ নেইনি,তবে সাধারণ জনগণ আমাদের উপস্থিতিতে পুকুর দখলমুক্ত করতে বাঁশ উঠিয়ে নিয়ে গেছে,স্কুলের টাকা আত্মসাৎ করার বিষয়টি মিথ্যে।
সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে পুকুরের মাছ,বাঁশ লুটপাট করার অভিযোগ উঠা শওকত আলী চেয়ারম্যানের বাড়ি গিয়ে না পেয়ে কাইতলা দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদে গেলে গণমাধ্যম কর্মীদের উপস্থিতি টের পেয়ে পরিষদ থেকে কেটে পরে  মুঠোফোন বন্ধ করে দেন। পরে একাধীকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তার সাথে যোগাযোগ করা যাইনি।
এবিষয়ে নবীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার একরামুল ছিদ্দিক জানান, ফেরদৌস ও শওকত আলীর মধ্যকার বিবাদটি আইনের মধ্যে থেকে এই সপ্তাহের মধ্যে বসে মিটমাট করার ব্যবস্থা করা হবে,জনগণের সুবিধা ও স্কুলের যেন স্বার্থ হয় এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হবে পুকুরের বিষয়ে। যেহেতু ফেরদৌস সাহেব দাবি করেছে তিনি ইজারা বুজে পাওয়ার সময় বিলম্বে বুজে পেয়েছে সেহেতু  ইজারার বিষয়টি ফেরদৌস সাহেব কে বলেছি উনার মেয়াদের সকল কাগজ পত্র নিয়ে আসতে।
Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Md Al Mamun

জনপ্রিয় খবর

নবীনগরে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সরকারি ইজারাকৃত পুকুরে, মাছ লুটপাটের অভিযোগ 

Update Time : ০৯:২০:২৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৬ মে ২০২৩
মমিনুল হক রুবেল, নবীনগর প্রতিনিধিঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়া নবীনগরে সরকারি ইজারার পুকুরের মাছ,বাঁশ লুটপাট করে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে কাইতলা দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শওকত আলীর বিরুদ্ধে।গত ১৯ মে ২০২২ সালে এক অর্থ বছরের জন্য  ইজারা নেয়া ১৮০/১৩৬ দাগের ৩.১৬ একর কাইতলা জমিদার বাড়ির খাস পুকুরের ইজারার মেয়াদ ১৫ দিন থাকা সত্বেও ঐ ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান রাস্তা করার নামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর  সহযোগিতা ছাড়া স্থানীয় তার অনুসারীদের দিয়ে মাছ বাঁশ লুটপাট করে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ তুলেছে ইজারাদার কাজী ফেরদৌস।
কাজী ফেরদৌস অভিযোগ করে বলেন, জমিদার বাড়ির পুকরটি সরকারি খাস খতিয়ানে যাওয়ার পর শওকত আলী চেয়ারম্যান তার সাঙ্গপাঙ্গ দিয়ে ১৯৯৭ সালে তৎকালীন সাংসদ এডভোকেট আবদুল লতিফের সময় জাল দলিল করে আত্মসাৎ করার পায়তারা করে।পরে ঐ সংসদ সদস্যের নির্দেশে কাজী ফেরদৌস সভাপতি হয়ে এলাকার মৎসজীবিদের নিয়ে তিতাস মৎসজীবি সমবায় সমিতি গঠন করে জাল দলিলের বিরুদ্ধে নবীনগর থানায় মামলা দায়ের করেন।এতে শওকত গংরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে সাংসদ এডভোকেট আবদুল লতিফ মারা যাওয়ার পর কাজী আনোয়ার নবীনগরের সংসদ সদস্য হওয়ার পর বিষয়টি সমাধান করে দিয়ে তিতাস মৎসজীবি সমিতি কে ৩ বছরের ইজারা দেয়।দীর্ঘদিন ধরে ইজারা নেয়া ঐ মৎসজীবি সমিতির সদস্যদের মৎস কার্ড না থাকায় ২০২২ সালের খাস কালেকশনে নিয়ে সরকার ঐ সালের ১৯ মে আমাকে এক অর্থ বছরের জন্য ইজারা দেয়।কিন্তু ইংরেজি মাসের হিসেব মতে চলতি মাসের ১৯ তারিখ পর্যন্ত সময় থাকা সত্বেও ৪ মে কাইতলা দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শওকত আলী তার সাঙ্গপাঙ্গ দিয়ে পুরো পুকুরে মাছ বাঁশ লুটপাট করে নিয়ে যায়।এসময় আমি লোকজন নিয়ে পুকুরে গিয়ে বাঁধা দিতে গেলে উল্টো আমাকে হুমকি ধামকির স্বীকার হয়।পরে বিষয়টির প্রতিকার চাইতে উপজেলা প্রশাসন কে অবগত করি।
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি  সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া জানান,শওকত আলী চেয়ারম্যান ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা ৩/৪ শত লোক নিয়ে এসে আমাদের চোখের সামনে পুকুরের মাছ, বাঁশ লুটপাট করে নিয়ে গিয়েছে,আমরা বাঁধা দিলে সে ও তার লোকজন আমাদের সাথে অশ্লীল ভাষায় কথা বলে।
অপর এক প্রত্যক্ষদর্শী মিন্টু মিয়া জানান, খবর পেয়ে বাজার থেকে এসে দেখি শওকত চেয়ারম্যান তার লোকদের নির্দেশ দিচ্ছে সব মাছ, বাঁশ উঠিয়ে নিয়ে যেতে।
মাছ লুটপাটের ঘটনায় যুক্ত থাকা সৈয়দ নাজমুল হাসান বলেন,আমরা মাছ নেইনি,তবে সাধারণ জনগণ আমাদের উপস্থিতিতে পুকুর দখলমুক্ত করতে বাঁশ উঠিয়ে নিয়ে গেছে,স্কুলের টাকা আত্মসাৎ করার বিষয়টি মিথ্যে।
সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে পুকুরের মাছ,বাঁশ লুটপাট করার অভিযোগ উঠা শওকত আলী চেয়ারম্যানের বাড়ি গিয়ে না পেয়ে কাইতলা দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদে গেলে গণমাধ্যম কর্মীদের উপস্থিতি টের পেয়ে পরিষদ থেকে কেটে পরে  মুঠোফোন বন্ধ করে দেন। পরে একাধীকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তার সাথে যোগাযোগ করা যাইনি।
এবিষয়ে নবীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার একরামুল ছিদ্দিক জানান, ফেরদৌস ও শওকত আলীর মধ্যকার বিবাদটি আইনের মধ্যে থেকে এই সপ্তাহের মধ্যে বসে মিটমাট করার ব্যবস্থা করা হবে,জনগণের সুবিধা ও স্কুলের যেন স্বার্থ হয় এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হবে পুকুরের বিষয়ে। যেহেতু ফেরদৌস সাহেব দাবি করেছে তিনি ইজারা বুজে পাওয়ার সময় বিলম্বে বুজে পেয়েছে সেহেতু  ইজারার বিষয়টি ফেরদৌস সাহেব কে বলেছি উনার মেয়াদের সকল কাগজ পত্র নিয়ে আসতে।