নিজস্ব প্রতিবেদক:ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলায় চলছে মাদকের অভয়ারন্য। কোনভাবেই এ উপজেলায় থামছেনা মাদকের স্বর্গ।
বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে ৩৪ কিলোমিটার সীমান্ত পথ রয়েছে এই উপজেলায়। দীর্ঘ সীমান্ত পথ থাকার সুবাদে ওই উপজেলার অন্তত তিনশ’র লোকের উপড়ে মাদক কারবারের সঙ্গে জড়িত। মাঝে মধ্যে পুলিশের কিছু অভিযান দেখা গেলেও মাদক পাচারের সঙ্গে সরাসরি জড়িত এসব রাঘববোয়ালরা থাকছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে।
এ উপজেলার গ্রামের সাধারণ মানুষরা বলেন, বিগত সময়ে মাদকের বিস্তার কম ছিলো এখন মাদক কারবারীরা বেশ সক্রিয়। একপ্রকার বলা যায়, প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তার সুযোগে মাদক ব্যবসায়ীরা হরদম এলাকায় ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিজয়নগর উপজেলা চান্দুরা এলাকায় পুলিশের ছত্রছায়ায় বেশ কয়েকটি মাদক ব্যবসায়ীর বাড়িতেই ওপেন মাদক বিক্রি করছে। চান্দুরাসহ বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন ঘোরে দেখা যায় মাদকের বিস্তার।চান্দুরা,পাহাড়পুর, হরষপুর, চম্পক নগর, বিষ্ণুপুর, কালাছড়া,সিঙ্গারবিল এলাকায় মাদকের রমরমা ব্যবসা চলছে। মাদক নির্মূলে পুলিশের নেই কোন উল্লেখযোগ্য অভিযান।
আরও জানা যায় বিজয়নগর থানার অফিসার ইনচার্জ রাজু আহম্মেদ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় যোগদান করেছেন ১৮-১২-২০১৬ তারিখে। যোগদান করার পরথেকে সদরসহ বিভিন্ন উপজেলার ফাঁড়ি ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসাবে দায়িত্বে ছিলেন। দীর্ঘ প্রায় ৭ বছর,এক জেলায় কাজ করার সুবিধার্থে মাদক নির্মূল করতে উল্লেখযোগ্য কোন অভিযান না দেখা গেলেও একই জেলায় বহাল আছেন তিনি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, থানাসহ চারটি পুলিশ ফাঁড়ি এবং বিজিবি’র ছয়টি বর্ডার অবজারভেশন পোস্ট থাকা সত্ত্বেও মাদক পাচার দিন দিন বেড়েই চলেছে বিজয়নগরে। এছাড়া জেলা পর্যায়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, গোয়েন্দা শাখা পুলিশ ও র্যাবএকশন ব্যাটালিয়ন থাকার পরেও বন্ধ হচ্ছে না মাদকের পাচার ও বিভিন্ন স্পটগুলোতে রমরমা ব্যবসা। এই উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে প্রতিদিন জেলা সদর, কিশোরগঞ্জের ভৈরব, নরসিংদী ও নারায়ণগঞ্জের গাউছিয়া থেকে শত শত যুবক আসে মাদক সেবন করতে।
আরও জানা যায়, মাদক কারবারের সঙ্গে জড়িত সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোর কেউ কেউ বিজয়নগর থানার পুলিশের ‘সোর্স’ হিসেবে কাজ করেন সেই সুবিধা নিয়ে তারা নিজেদের মাদক ব্যবসা নির্বিঘ্নে চালিয়ে যাচ্ছেন। সুযোগ বুঝে ফাঁসিয়ে দিচ্ছে প্রতিপক্ষ কাউকে।
এ বিষয়ে বিজয়নগর থানার অফিসার ইনচার্জ রাজু আহম্মেদের মুঠোফোনে ফোন দিলে উনি রিসিভ করেন নাই।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন মুঠোফোনে বলেন, বিজয়নগরে মাদক ব্যবসায়ীদের বিষয়ে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। মাদক ব্যবসায়ীদের সাথে যদি আমার পুলিশ সদস্য কেউ জড়িত থাকে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।